রাণীশংকৈল প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় এ বছর গাছে গাছে কোথা থোকা আমের মুকুলের সোনালি রঙয়ের নান্দনিক দৃশ্য বসন্তকে সাজিয়েছে অপরুপ রুপে।প্রতিটি আমের মুকুলের সুবাসে ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে বসন্ত বাতাসে।মধু মাসে মৌমাছিরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে আমের মুকুলে মুকুলে মধু সংগ্রহ করতে পার করছেন ব্যস্ত সময়। তাদের গুন গুন শব্দে নব বসন্তে যোগ হয়েছে এক নতুন মাত্রা।
শীতের জড়তা কাটিয়ে এদিকে কোকিলের সেই কুহুতানে মাতাল হয়ে উঠেছে ঋতুরাজ বসন্তের দিগন্ত জোড়া প্রাকৃতিক মাঠের পর মাঠ। ছোট-বড় প্রায় সব আম গাছে ধরেছে অসংখ্য গুচ্ছ গুচ্ছ কিংবা থোকা থোকা নতুন আমের মুকুল। মুকুলের পাগল করা ঘ্রান মানুষের মনকে করছে বিমোহিত। যেন হাজির হয়েছে মধুমাসের আগমনী বার্তা নিয়ে। আবার এসব আমের মুকুলকে বিভিন্নভাবে টিকিয়ে রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে পরিচর্যা করে যাচ্ছেন আম চাষিরা। যেন প্রতিটি মুকুলের শীষে বিভিন্ন লাভের স্বপ্ন বুনছেন তারা।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন আম বাগান ও আম চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি আম গাছে প্রায় পুরোদমে চলে এসেছে আমের সোনালী মুকুল।
আগাম মুকুলে আম চাষিদের মনে আশার প্রদীপ জ্বলে ওঠেছে। মাঘের হিমেল হাওয়ায় সবুজ পাতার ফাঁকে দোল খাচ্ছে এসব মুকুল। গাছের কচি শাখা-প্রশাখায় ফোটা ফুলগুলোর উপরে সূর্যের আলো পড়তেই চিকচিক করে উঠছে। বাগান গুলোর দিকে তাকালে আমের পাতা চোখে পড়েনা,শুধু চোখে পড়ে সোনালী মুকুলে ছেয়ে যাওয়া সুবিশাল হলুদের গালিচা। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া বিরাজ করায় কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে নতুন মুকুলগুলো বলেও জানান আম চাষিরা। তাই মুকুলে রোগবালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ উপজেলায় বর্তমানে ৭ শত ১১ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এছাড়াও উপজেলার প্রতিটি বাড়ির উঠান ও আনাচে কানাচে লাগানো আম গাছের সংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার। আম বাগানি ও বাড়ির মালিকেরা প্রতিবছর আম বিক্রি করে অনেক ভালোবান হন। এবারো হবেন বলে তারা আশাবাদী। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আম ব্যবসায়ীরা আমের মৌসুমে এ উপজেলায় এসে আম কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় আম পাঠিয়ে থাকেন। এ উপজেলায় উৎপাদিত আমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো,আম্রপালি, রুপালি, হাড়িভাঙা,হিমসাগর ল্যাংড়া,গোপালভোগ,সুর্যপূরীসহ দেশি প্রজাতির বিভিন্ন আম।
যা অনেক মিষ্টি ও সুস্বাদু। উপজেলার কুমোরগঞ্জ ও কাশিপুর গ্রামের আম বাগান মালিক গোলাম রব্বানী এবং মিঠু জানান তাদের চারটি করে আম বাগান রয়েছে যার জমির পরিমান প্রায় ১৫ একর। তারা জানান এই মৌসুমে অস্বাভাবিক আমের মুকুল দেখা যাচ্ছে, যদি শেষ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে বাম্পার ফলন মিলবে ইনশাল্লাহ এবং দাম ভালো থাকলে অর্থনৈতিকভাবে বেশ টাকা পাওয়া যাবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সহীদুল ইসলাম জানান উপজেলায় এ বছর ৭১১ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে।
প্রতিটি আম গাছে পর্যাপ্ত পরিমানে আমের মুকুল আসা প্রায় এসে গেছে। আমরা কৃষি অফিস উপ-সহকারী কৃষি অফিসারদের নিয়ে আম চাষিদের সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে এবং দাম ভালো থাকলে আম চাষিরা অর্থনৈতিক ভাবে অনেক লাভোবান হবেন বলে আশা করছি।
https://slotbet.online/