জনজীবনে দুর্ভোগ বয়ে আনা চলমান তাপপ্রবাহের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। গতকাল দেশের পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত এটিই দেশের সর্বোচ্চ এবং চুয়াডাঙ্গা জেলায় গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এদিন দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও এটি। এদিকে টানা তাপপ্রবাহে অসুস্থ হয়ে ১০ দিনে ৮০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গতকালও সারা দেশে অন্তত ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে গরমে নিদারুণ ভোগান্তির মধ্যেও আবহাওয়া অফিস খুব একটা সুসংবাদ দিতে পারছে না। আগামী মাসের ২ তারিখে সারা দেশে বৃষ্টির আভাসের কথা বলা হলেও বিরাজমান তাপপ্রবাহ আরও দুয়েকদিন অব্যাহত থাকার শঙ্কার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ করিম মানবজমিনকে বলেন, গতকাল বিকাল পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এটিই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। মঙ্গলবার দেশের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪৩, পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৫, যশোরে ৪২ দশমিক ৮, রাজশাহীতে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও সিলেটের কিছু অঞ্চল ছাড়া দেশের বাকি অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। মে’র প্রথম সপ্তাহে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী দুদিন তাপমাত্রা মোটামুটি এমনই থাকতে পারে। তবে তাপমাত্রা যাই থাকুক গরমের অনুভূতি বাড়তে পারে। বৃষ্টির আগে এমন অসহনীয় অনভূতি হয়।
এদিকে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে গরমজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ ছাড়া হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে গরমজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীও বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীরা। গত ১০ দিনে মানবজমিন সংবাদদাতা ও বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এ সময়ে গরমে ৮৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত রোববার সর্বোচ্চ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ২৩শে এপ্রিল পর্যন্ত ৩৩ জন এবং ২৪শে এপ্রিল ৯ জন, ২৫শে এপ্রিল ৫ জন, ২৬শে এপ্রিল ৭ জন ও ২৭শে এপ্রিল ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গরমজনিত কারণে গতকালও ৪ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে রাস্তা সংস্কারের কাজ করার সময় প্রচণ্ড দাবদাহে অসুস্থ হয়ে এক নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ওই নারীর হিটস্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসক। নারী শ্রমিকের নাম লতিফা বেগম (৪০)। তিনি উপজেলার নারগুন গ্রামের মৃত মোকসেদুলের স্ত্রী। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শামীমুজ্জামান বলেন, ধারণা করছি অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকজনিত কারণে ওই নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
এ ছাড়া সুবর্ণচরে ধান কাটতে গিয়ে রোদের মধ্যে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে (হিটস্ট্রোকে) মহিব উল্যাহ (৫২) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে তার নিজের জমিতে ধান কাটতে গেলে দুপুর ১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহতের ভাই হেদায়েত উল্যাহ বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় সকাল ৮টার দিকে কাজের লোকের সঙ্গে জমিতে বোরো ধান কাটতে যায়। এর মধ্যে সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় হাবিবিয়া বাজারে এসে নাস্তা করে আবার জমিতে যায়। জমিতে ধান কাটা অবস্থায় প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে শরীর খারাপ লাগে ও চোখে ঝাপসা দেখছে বলে মাথা ঘুরে জমিতে পড়ে যায় সে। পরে জমিতে থাকা অন্যদের সহায়তায় তাকে বাড়িতে এনে সেখান থেকে সুবর্ণচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে তীব্র দাবদাহে হিটস্ট্রোকে বাবলু খন্দকার (৪৫) নামে এক ভ্যানচালকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বিক্রির জন্য বাবলু খন্দকার ভ্যানযোগে কয়েক বস্তা আলু নিয়ে গোপীনাথপুর হাটে যান। সেখানে আলুর বস্তা নামিয়ে রেখে চা খেতে দোকানে বসেন তিনি। এ সময় হঠাৎ করে বুকে ব্যথা উঠলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়া ইউনিয়নের লৌহগাঁও গ্রামের কৃষাণী ফজিলা বেগম (৬০)’র মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, গতকাল দুপুর ২টার দিকে তিনি পাশের মাঠে পাকামরিচ তুলতে যান। কিন্তু বিকাল সাড়ে ৪টা বেজে গেলেও বাড়িতে না ফেরায় স্বজনরা তাকে খুজতে মাঠে যান। সেখানে পৌঁছে তারা ফজিলা বেগমের লাশ দেখতে পান। স্থানীয়দের ধারণা তিনি গরমে স্ট্রোক করে মারা গেছেন।
আরএম/ টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/
Very nice post and straight to the point. I am not sure if this is truly the best place to ask but do
you folks have any thoughts on where to hire
some professional writers? Thanks 🙂 Escape room lista