যারা দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনা করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন; তাদেরকে ১৫ বছরের আগের এবং বর্তমান বাংলাদেশের পার্থক্য খুঁজতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (২ মে) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে থাইল্যান্ড সফর বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার শক্তি দেশের জনগণ। জনগণ যতদিন চাইবে, ততদিন ক্ষমতায় থাকবে আওয়ামী লীগ। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত শোষিত-বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ। যত চক্রান্ত হোক, তা পাশ কাটিয়ে দেশের মানুষকে নিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনি আমরা।
তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্র নেই, ভোটের অধিকার নেই বলে, তারাই গণতন্ত্র হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের সময়ে মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা- সর্বোপরি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। ১৫ বছর আগে কী বাংলাদেশ ছিল, এখন কী অবস্থায় আছে? কেউ যদি পরিবর্তন না দেখে, তাহলে তো বলার কিছু নেই। তবে, সাধারণ মানুষ সব বোঝে। তারা কিন্তু কারো কথায় বিভ্রান্ত হয় না।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার গুরুত্ব দেয়, জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই বন্ধুত্ব ও সম্পর্ক অনেক সুযোগ-সুবিধা এনে দেবে। থাইল্যান্ডের সাথে আমদানি-রপ্তানিতে ভালো সুযোগ সৃষ্টি হবে। পর্যটনে তারা অগ্রগামী, তাদের থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে এই খাতে বাংলাদেশ ভালো করতে পারে। এছাড়া, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অভিজ্ঞতা মাধ্যমে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহযোগিতা করবে থাইল্যান্ড।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে যেসব রোহিঙ্গা আমাদের এখানে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেছি। মিয়ানমারের ওপরে থ্যাইল্যান্ডের একটা প্রভাব আছে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিষয়টি তিনি আরও গভীরভাবে দেখবেন এবং প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা করবেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের এই বিষয়টা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে, বর্তমানে যে অবস্থাটা চলছে, সেটা নিয়ে তারাও উদ্বিগ্ন। তারপরও প্রত্যাবাসনের চেষ্টা চলবে বলেই তারা আশ্বস্ত করেছেন। তার সঙ্গে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার সব সময় ফিলিস্তিনিদের পাশে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে, জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, যেভাবে ফিলিস্তিনে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসরকে হাতকড়া পরিয়ে গ্রেপ্তার করা হলো, তা ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচারের কথা মনে করিয়ে দেয়। তারা আবার মানবাধিকারের ছবক দেয়।
অপর প্রক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমেরিকায় বিভিন্ন স্কুল, শপিং মল ও রেস্টুরেন্টে অনবরত গুলি হচ্ছে, আর মানুষ মারা যাচ্ছে। এমন কোনো দিন নেই, সে দেশে গুলি করে মানুষ মারা হচ্ছে না। তাদের সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, এর আগেও আমাদের বাংলাদেশি কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করেছি এবং বিচার করে তারা আমাকে জানিয়েছে। আমাদের যেটুকু করার, সেটা আমরা করে যাচ্ছি। প্রতিবাদ শুধু এখানেই না, আমেরিকায় বসেও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
যুদ্ধ এবং স্যাংশনের কারণে বিভিন্ন দেশে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সেই তুলনায় বাংলাদেশ দ্রব্যমূল্য খুব কমই বেড়েছে।
দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকা অবস্থায় হঠাৎ অস্থিতিশীল হয়ে যাচ্ছে, এতে রাজনৈতিক কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না? এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের নামে যখন জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারে না, তখন কিছুটা তো ষড়যন্ত্র আছেই। অসাধু ব্যবসায়ীরাও অতি মুনাফার লোভে পণ্য মজুদ করে রেখে দাম বাড়ায়। সরকার এসব বিষয় নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে বাজার মনিটরিং করছে।
আরএম/ টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/