গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) নামে একটি সংগঠন জানিয়েছে, নভেম্বর মাসে দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৩৫৮টি। এর মধ্যে ৪৩টি ধর্ষণের ঘটনা, ৮টি সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর দুই নারীকে হত্যা করা হয়েছে। আগের মাসের তুলনায় নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা কিছুটা কমলেও তা উদ্বেগজনক রয়ে গেছে বলে মনে করছে এমএসএফ।
এ ছাড়া এই প্রতিবেদনে কারাগারে মৃত্যু এবং গণপিটুনির তথ্যও উল্লেখ করা হয়েছে। এমএসএফের মাসিক রিপোর্টে বলা হয়, নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতারোধে দেশে যথেষ্ট কঠোর আইন রয়েছে, তারপরও অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর ভূমিকা দেখা যায় না। রিপোর্টে বলা হয়, ধর্ষণের শিকার ৪৩ জনের মধ্যে ৯ শিশু ও ১৫ জন কিশোরী। এ ছাড়া আরও ২ কিশোরী
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার এবং ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে অপর দুই কিশোরী। এদিকে গত মাসে ১৮টি ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। ১৭ জনকে যৌন হয়রানি এবং শারীরিক নির্যাতনের ৪৮টি ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ২৩ কিশোরী ও ৪৬ নারীসহ ৬৯ ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন।
এদিকে নভেম্বরে কারা হেফাজতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এমএসএফের রিপোর্টে বলা হয়, তাদের মধ্যে ২ জন কয়েদি এবং ৯ জন হাজতি। এমএসএফ বলছে, কারা অভ্যন্তরে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি হেফাজতে মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে তদন্ত করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
নভেম্বরে পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলন এবং এতে সহিংসতার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে এমএসএফের প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক নারীসহ ৪ পোশাকশ্রমিকদের মৃত্যু হয়। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ৪১টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ হাজার ৫০০ জনকে আসামি এবং ১১৯ জন গ্রেপ্তার করা হয়।
গণপিটুনির তথ্য প্রকাশ করে এমএসএফের রিপোর্টে বলা হয়, নভেম্বরে অন্তত ১৩টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে; এতে ৮ জনের মৃত্যু এবং ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এমএসএফ বলছে, প্রচলিত আইন অবজ্ঞা করে গণপিটুনির ঘটনাগুলোকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে গণ্য করা হয়।
নভেম্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার ১২টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে অপহৃত হয়েছেন বিএনপির ১২ নেতাকর্মী, গণঅধিকারের ১ জন, আওয়ামী লীগের ১ জন এবং ইসলামী আন্দোলনের ১ কর্মী রয়েছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ২ জন এবং নির্যাতনে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে এমএসএফ। এ ছাড়া নভেম্বরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৬টি অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১ জন কিশোর, ৯ জন নারী ও ১৬ জন পুরুষ।
গত এক মাসে ১৭টি রাজনৈতিক পুরনো মামলায় বিএনপির ২৮১ নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে সংস্থাটি বলছে, ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের রাজনৈতিক মামলায় এ সমস্ত সাজা হচ্ছে। গত ১৬ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে হেলমেট ও মুখোশ পরে অন্তত ২০টি গুপ্ত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩ জন নিহত ও ১৭ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
আরএম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/