টাঙ্গন ডেস্ক নিউজ :
ঠাকুরগাঁও : উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। এ জেলায় টানা ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে বীপর্যস্থ হয়ে পড়েছে জনজীবন। অপরদিকে নষ্ট হতে বসেছে বোরো ধানের বীজতলা। মৌসুমের শুরুতে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। তাপমাত্রা ৮ থেকে ২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার ৬৩২ মেট্রিক টন। গত বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত জেলায় মোট ৫ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। যা গত বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল ৬০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কোথাও কোথাও বীজতলা হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে বীজতলা রক্ষায় সতর্কতা মুলক ব্যবস্থা হিসেবে প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন কৃষক। এতে করে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে বলে ধারণা করছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ইতিমধ্যে কৃষকদের শুকনো, ভেজা, ভাসমান তিন ধরনের বীজতলার বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে। বীজতলা তৈরীতে স্থান, জমি তৈরী, শেড তৈরী, সার প্রয়োগ, বীজ বপন, বীজ জাগ দেয়াসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে কৃষকদের। এছাড়াও শুকনো বীজ একটানা কত ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে এবং কোন জাতীয় স্থানে রাখতে হবে সে বিষয়েও বিস্তারিত তথ্য তাদের প্রদান করা হয়। পাশাপাশি ভাল চারা উৎপাদনের জন্য বীজের ভ্রনজাগরিত বিষয়ে দিক নির্দেশনা নিয়মিত প্রদান করা হচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া রামনাথ এলাকার কৃষক সুধির রায় বলেন, প্রত্যেক বছর তিনি কমপক্ষে ৩ বিঘা (১৫০ শতক) জমিতে বোরো ধান লাগান। এ বছরও তিনি বোরো ধানের বীজতলা তৈরী করেছেন। তীব্র শীতে বেশিরভাগ চারা গাছ মারা যাচ্ছে। শীতের প্রকৌপে চারাগুলি বড় হচ্ছে না বলে। তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পেলে চারা আরও ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।
সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের ভেলাজান গ্রামের কৃষক সামশুল হক জানান, প্রত্যেক বছর তিনি প্রায় সাড়ে ৪ বিঘা (২২৫ শতক) জমিতে বোরো ধান চাষ করে থাকেন। এ বছরও বোরো ধান রোপনের কাজ শুরু করবেন। আপাতত বোরো ধানের বীজতলা করেছেন, শীতের কারনে তিনিও সমস্যায় পড়েছেন বলে জানান।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগ থেকে ইতিমধ্যে কৃষকদের বিভিন্ন তথ্য প্রদানসহ সহযোগিতা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত শীতের কারণে বেশ কিছু এলাকায় সামান্য কোল্ড ইনজুরিতে বোরো বীজতলার ক্ষতির খবর পাওয়া গেলেও, সেটি বড় সমস্যা নয়। জেলার কৃষকদের প্লাস্টিক দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বড় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমনের মত বোরো ধানেরও বাম্পার ফলন হবে এবং লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
https://slotbet.online/