টাঙ্গন ডেস্ক : গাজীপুরের কোনাবাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন। তারা সকলেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ধারাবাহিক ভাবে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) উদ্বেগ ও শোক প্রকাশ করেছে।
বুধবার (২০ মার্চ) ব্লাস্ট এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড এনফোরসমেন্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি নিশ্চিত করতে হবে এবং সেই সাথে নিহতের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবী জানিয়েছে ব্লাস্ট।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১৩ মার্চ বুধবার ইফতারের আগ মুহূর্তে কোনাবাড়ীর শ্রমিক কলোনির শফিক খান নামের এক ব্যক্তি বাসায় ব্যবহারের জন্য একটি গ্যাস সিলিন্ডার আনেন। পরে সিলিন্ডারটি চুলার সঙ্গে সংযোগ দেওয়ার পর তা হতে গ্যাস বের হতে থাকে। পরে তিনি সিলিন্ডারটি ঘরের বাইরে ফেলেন। সারি সারি ঘর থাকায় ওই স্থানে একটি মাটির চুলার আগুন থেকে সিলিন্ডারে আগুন লাগে। এ বিস্ফোরণের ঘটনায় ৩০ জন অগ্নিদগ্ধ যার মধ্যে ১৩ জন নিহত হয়েছেন।
অগ্নি নির্বাপণ সংক্রান্ত মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশনা ও বিদ্যমান আইন বাস্তবায়ন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড এনফোরসমেন্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি নিশ্চিতকরণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের অগ্নিকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধে ও অগ্নি নির্বাপণ বিষয়ে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে অনতিবিলম্বে জাতীয় নিরাপত্তা প্রচারাভিযান কার্যক্রম ঘোষণা করাসহ সকলের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ব্লাস্ট সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
সম্প্রতি ২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলী রোডসহ বিভিন্ন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের প্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট আইন অনুসরণ এবং প্রয়োগ না হওয়াতে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), নাজমুস সাকিব, এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এর দায়েরকৃত জনস্বার্থ মামলার শুনানি শেষে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ গত ৪ মার্চ অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন, ২০০৩ ও বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড ২০২০ কেন সুষ্ঠু ভাবে প্রয়োগ করা হবে না, বাণিজ্যিক স্থাপনা ও কারখানায় কেন অগ্নি নিরাপত্তা কক্ষ এবং পৃথক সিঁড়ির ব্যবস্থা করা হবে না এবং আবাসিক এলাকাতে বাণিজ্যিক স্থাপনা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (দক্ষিণ) কে কারন দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ছাড়াও নিহতদের পরিবার এবং আহতদের কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি রুল জারি করেন এবং মহামান্য আদালত ২০২৩-২০২৪ সালে কোন কোন ভবন, কারখানা এবং স্থাপনায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কতজন নিহত হয়েছেন এবং কি পরিমাণ ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে এবং এ বিষয়ে তারা কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন, তার তালিকা প্রদানের জন্য, বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কে নির্দেশ দেন।
দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এ সকল ঘটনায় ভুক্তভোগী কোন পরিবার এখনো আইনগত প্রতিকার পায়নি বিধায় ব্লাস্ট এ বিচার প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করার জোর দাবী জানাচ্ছে। আবাসিক ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইন না মানার কারণে সাধারণ মানুষের প্রাণহানির আরও একটি মর্মান্তিক ঘটনায় ব্লাস্ট গভীর উদ্বেগ ও শোক প্রকাশ করছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সিলিন্ডার কোম্পানি গুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা, খতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের যথাযত ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার খরচ বহন, ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড এর অধিনে এনফোর্সমেন্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি নিশ্চিত, গ্যাস সিলিন্ডার ব্যাবহারে নীতিমালার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে জোর দাবি জানায় ব্লাস্ট।
https://slotbet.online/