জানুয়ারিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেবতা রামের একটি বিশাল মন্দির উদ্বোধন করেছেন। এটি অযোধ্যায় কয়েক দশক আগে হিন্দু উগ্রবাদীদের দ্বারা ভেঙ্গে ফেলা শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের ভিত্তির ওপর নির্মিত হয়েছে।
বলিউডের সেলিব্রেটি থেকে শুরু করে ক্রিকেট তারকাদের অংশগ্রহণে সেই জমকালো অনুষ্ঠানে মোদি তার হাজার হাজার ভক্তদের বলেছিলেন যে ভারত একটি নতুন ইতিহাসের সূচনা করেছে।
অযোধ্যায় মোদির উদ্বোধনী ভাষণের পর উচ্ছ্বসিত হিন্দুবাদীরা ঘোষণা করেছিল যে, যেভাবে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে, সেভাবে আরও মসজিদ ধ্বংস করা হবে, যার ফলাফল স্বাভাবিকভাবেই মথুরার শাহী ইদগাহের মসজিদের ওপর পড়েছে। হিন্দুত্ববাদীরা দাবি করেছে যে এটি তাদের দেবতা কৃষ্ণের জন্মস্থানের উপর নির্মিত হয়েছিল।
এখন, মথুরা ভারতের অন্যতম স্থান, যেখানে হিন্দু মোদির ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সমর্থনে হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা শতাব্দী প্রাচীন ইসলামিক স্মৃতিস্তম্ভগুলিকে গুড়িয়ে দিয়ে হিন্দু মন্দির দিয়ে প্রতিস্থাপন করার পাঁয়তারা করছে।
মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ভারতে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসবে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, যেটির কৃতিত্ব যাবে মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী সমর্থকদের দিকে। মথুরার মুসলিম শিক্ষক তাসলিম কুরেশি এএফপিকে বলেন, ‘বিজেপি বারবার বলছে নির্বাচনের পর শাহী ইদগাহের অস্তিত্ব মুছে যাবে।’
মথুরার জনসংখ্যার ৮০ শতাংশেরও বেশি হিন্দুদের কল্যাণে ২০১৪ সালে মোদি প্রথম নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এর সংসদীয় আসনটি বিজেপির দখলে রয়েছে, যার প্রতিনিধিত্ব করেছেন চলচ্চিত্র তারকা হেমা মালিনী। এবং অযোধ্যা মন্দিরের উদ্বোধন অঞ্চলটির হিন্দু ভোটারদেরকে উস্কে দিয়েছে, যারা শাহী ইদগাহের মসজিদের অপসারণকে সমর্থন করে। এলাকাটির ইলেকট্রিশিয়ান গোকুল প্রসাদ এএফপিকে বলেন, ‹যেহেতু আমরা মথুরায় শাহী ইদগাহের খুব কাছে থাকি, তাই আমরা অবশ্যই মোদিকে ভোট দেব।›
এদিকে, অস্তিত্ব সঙ্কটে ভোগা মথুরার মুসলিম সংখ্যালঘুদের অনেকে এএফপিকে বলেছেন যে তারা শুক্রবার ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন শুধুমাত্র ভোটার তালিকায় তাদের নাম রয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য।
৫৫ বছর বয়সী রেহানা কুরেশি বলেন, ‘ওরা আমাকে বলেছে আমি বা আমার স্বামী ভোট দিতে পারব না কারণ আমাদের নাম নেই। আমরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এখানে বসবাস করেছি এবং ভোট দিয়েছি। তবে মনে হচ্ছে, আমাদের মুসলমানদের একমাত্র অধিকারটিও কেড়ে নেয়া হচ্ছে।
আরএম/ টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/