পঞ্চম উপজলা পরিষদ নির্বাচনের সময় ঠাকুরগাঁও হরিপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান মুকুলের নগদ অর্থ ছিল ৫০ হাজার টাকা। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ৬ হাজার ৬৮৫ টাকা। অর্থাৎ ৫ বছরের ব্যবধানে তার নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৫৪ গুণ। ২০১৯ সালে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমার পরিমাণ ছিল ৮৫ হাজার ৭৫৩ টাকা। বর্তমানে রয়েছে ৯০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ৫ বছরের ব্যবধানে তার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১০৫ গুণ। এ ছাড়া তার স্ত্রী রেখা আক্তার বানুরও ব্যাংক জমা বেড়েছে প্রায় ২৭ গুণ।
জিয়াউল হাসান মুকুল হরিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগর সভাপতি। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পুনরায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে হলফনামা জমা দিয়েছেন। জমা দেওয়া সেই হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
হলফনামায় জিয়াউল হাসান মুকুল একটি বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এবং তার স্ত্রী রেখা আক্তার বানু একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামার তথ্যমতে, ২০১৯ সালের পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় জিয়াউল হাসান মুকুলের নগদ অর্থ ছিল ৫০ হাজার টাকা। আর এবার ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হলফনামায় দেখানো হয়েছে ২৭ লাখ ৬ হাজার ৬৮৫ টাকা। অর্থাৎ তার নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৫৪ গুণ। ২০১৯ সালে তার স্ত্রী রেখা আক্তার বানুর হাতে নগদ কোনো টাকা না থাকলেও এবার হলফনামায় দেখানো হয়েছে ৪ লাখ ২৬ হাজার ৩৪৪ টাকা। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হলফনামায় মুকুলের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৮৫ হাজার ৭৫৩ টাকা। ৫ বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৯০ লাখ টাকায়। সে হিসাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার টাকার পরিমাণ বেড়েছে ১০৫ গুণ। স্ত্রী রেখা আক্তার বানুর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৫ বছর আগে জমা ছিল ৩৬ হাজার ৯৭১ টাকা। ৫ বছর পর সেই টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ। অর্থাৎ স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমার পরিমাণ বেড়েছে ২৭ গুণ।
এ ছাড়া ২০১৯ সালের নির্বাচনের হলফনামায় কৃষি খাত থেকে ৫০ হাজার, শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র থেকে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৫০ টাকা আয় উল্লেখ করেছিলেন হরিপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান মুকুল। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের হলফনামায় তিনি কৃষি খাত থেকে ৩৪ হাজার, শিক্ষকতা থেকে ৪ লাখ ৩ হাজার ৪১৭ টাকা ও চেয়ারম্যান পদের সম্মানী বাবদ ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা আয় উল্লেখ করেছেন। সেই হিসাবে ২০১৯ সালে জিয়াউল হাসান মুকুল তার মোট আয় দেখিয়েছিলেন ৫ লাখ ৯৮ হাজার ৬৩০ টাকা। এবার তা বেড়ে হয়েছে ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৪১৭ টাকা। অন্য দিকে ২০১৯ সালে তার স্ত্রী রেখা আক্তার বানুর আয় ছিল ৩ লাখ ৪ হাজার ৩৯২ টাকা, এবার তা বেড়ে হয়েছে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ১৮০ টাকা। এ ছাড়া ২০১৯ সালের হলফনামায় স্ত্রীর নামে ২০ ভরি স্বর্ণ দেখালেও এবার হলফনামায় নিজ নামে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার দেখিয়েছেন।
হলফনামার তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে জিয়াউল হাসান মুকুল বলেন, হলফনামায় যা আছে তাই, এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হরিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে জিয়াউল হাসান মুকুল ছাড়াও ওই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন হরিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম শামীম ফেরদৌস টগর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ুম পুষ্প।
ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হরিপুর উপজেলা। আগামী ৮ মে ব্যালটের মাধ্যমে হরিপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার ৪৯৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬২ হাজার ৩৬৯ ও নারী ভোটার ৫৮ হাজার ১২৮ জন।
আরএম/ টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/