বছরের পর বছর অবৈধভাবে দখল করে বসবাস করছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের সরকারি আবাসিক ভবন। প্রকৃত কর্মচারি এ থেকে বঞ্চিত হলেও কার্যত পদক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের। তবে উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বরতরা বলছেন আগামী মাস থেকে নিয়মের বাইরে কেউ থাকবে না এসব ভবনে। জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী এসব আবাসিক ভবনে গেজেটভুক্তরা বাদে অল্প বেতনে সংশ্লিস্ট উপজেলায় কর্মরতরা ভাড়ায় থাকবেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বরত উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল কাদেরের যোগসাজসে এ উপজেলায় এমন অনিয়মের চিত্র।
দেখা গেছে, গেজেটভুক্ত কর্মকর্তা ও বহিরাগতরা আবাসিক ভবন দখলে নিয়ে বছরের পর বছর বসবাস করছে। তারা সময় মতো ভাড়া দেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। সদর উপজেলায় চাকুরিরত দু-একজন কর্মচারি বসবাসের সুযোগ পেলেও বাকিরা বঞ্চিত। এতে ক্ষুদ্ধতা প্রকাশ করলেও দায়িত্বরতদের জন্য কোটঠাসায় রয়েছেন।
আবার কেউ কেউ অন্য জেলায় বদলী হলেও কোয়ার্টারের ঘর নিজ দখলেই রেখেছেন। আর এসব জেনেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ সুবিধা বঞ্চিতদের। দীর্ঘদিন এভাবে চলে এলেও নেওয়া হচ্ছে না কার্যকর কোনো ব্যবস্থা।
সরকারি কোয়ার্টারে বসবাসের তালিকায় রয়েছেন পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলায় এলজিইডিতে কর্মরত মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার এলজিইডিতে কর্মরত আবু সাঈদ মো: করিম, একই উপজেলায় একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: মাবুদ হোসেন, পঞ্চগড় উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা মো: বাবুল আক্তার, নীলফামারি জেলার এলজিউডি’র সার্ভেয়ার মো: মফিজুর রহমান, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উচ্চমান সহকারী মো: মুঞ্জুর আলম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের অফিস সহায়ক মো: রবিউল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিস সহকারী মো: সফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব চন্দ্র রায়, উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ের সিএ কাম-উচ্চমান সহকারী রেবা খাতুন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক মো: মুন্না, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো: সাজ্জাত হোসেন, বিআরডিবি’র জুনিয়র অফিসার (হিসাব) মো: আবদুল হাই আল হাদী ও যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর জহির রায়হান।
প্লট বাবদ প্রতিমাসে ভাড়া ৩ হাজার টাকা হলেও নিয়মিত কেউ ভাড়া পরিশোধ করেন না। তাঁর মধ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিস সহকারী মো: সফিকুল ইসলামের বকেয়া রয়েছে ৭২ হাজার টাকা, মাবুদ হোসেনের ১৫ হাজার টাকা, আবু সাঈদের ১২ হাজার টাকা, বাবুল আক্তারের ৬ হাজার টাকা, মঞ্জুর আলমের ৬ হাজার টাকা, রবিউলের ১২ হাজার টাকা, বিপ্লব চন্দ্রের ৬ হাজার টাকা, রেবা খাতুনের ৯ হাজার টাকা, মফিজুর রহমানের ১৫ হাজার টাকা, মুন্নার ৬ হাজার টাকা, সাজ্জাতের ৬ হাজার টাকা, হাদীর ৯ হাজার টাকা ও জহির রায়হানের ৬ হাজার টাকা।
বদলি হওয়ার পরেও ঘর না ছাড়ার প্রসঙ্গে আবু সাঈদ মো: করিম ও মোস্তাফিজুর রহমান লিটনসহ অন্যান্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা দায়িত্বরত উপজেলা প্রকৌশলীকে দেখিয়ে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বলেন, উপজেলা কোয়ার্টারে ১৪টি পরিবার আছে। তাঁর মধ্যে অনেকের বদলী হয়ে গেছে। অনেকের ভাড়াও বাকি আছে। নোটিশ দিয়েও লাভ হয়নি। তবে এবার দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিয়মের বাইরে কেউ থাকতে পারবে না।
আর এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।
আরএম/ টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/