পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩টি গ্রামের বাসিন্দারা ক্ষতিপূরণের দাবিতে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা ৬ দফা দাবির ভিত্তিতে তাদের ক্ষতিপূরণের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।
ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মোঃ গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো হলেও আজ পর্যন্ত কোনও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করা হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি আবারও লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয় এবং ৯ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা জমা দেয়া হয়। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় এবার বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচির হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ৬ দফা দাবি দেওয়া হয়েছে।
দাবিগুলো হলো- ১. চাকরির ব্যবস্থা: প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার থেকে একজনকে চাকরি দেওয়া । ২. পুনর্বাসন: ঝুঁকিপূর্ণ ঘরবাড়ি পুনঃনির্মাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা। ৩. আবাসন ব্যবস্থা: ভূমিহীন পরিবারগুলোর জন্য উন্নতমানের বাসস্থান তৈরি। ৪. পূর্বের ক্ষতিপূরণ: পূর্বের ক্ষতিগ্রস্থদের অবশিষ্ট টাকা দ্রুত প্রদান। ৫. সুপেয় পানি ও অবকাঠামো: সুপেয় পানির ব্যবস্থা এবং মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও রাস্তা পুনর্নির্মাণ। ৬. কয়লা উত্তোলন থেকে বোনাস: কয়লা উত্তোলনের লভ্যাংশ থেকে ৫% বোনাসের ব্যবস্থা।
চৌহাটি গ্রামের মোছাঃ মোসলেমা বেগম ও মালেকা বেগম বলেন, “খনির কার্যক্রমের কারণে আমাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। রাতে ঠিকভাবে ঘুমাতেও পারি না, প্রতিদিন বাড়ির ফাটল আরও গভীর হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আমাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিলেও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে বসবাস করব?”
বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আল বিরোনী, রবিউল ইসলাম, মোঃ আব্দুর রহমান, মোঃ আলী হোসেন, মোঃ রবিউল ইসলাম মন্ডলসহ বিভিন্ন গ্রামের আরও অনেক ক্ষতিগ্রস্থ বাসিন্দা। তারা সকলেই তাদের সমস্যা তুলে ধরে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। ক্ষতিগ্রস্তরা এখন আশায় রয়েছেন যে, তাদের দাবিগুলো শীঘ্রই বাস্তবায়িত হবে এবং তারা তাদের অধিকার ফিরে পাবেন। তবে, যদি দাবি পূরণ না হয়, তাহলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন।
এ রাজা /টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/