• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০১ পূর্বাহ্ন

বিচারকের নাম ভাঙিয়ে অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে

Reporter Name / ২৪০ Time View
Update : বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪

মো. রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ড্রাইভার মোকসেদুল রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতি, যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন, অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন, এবং আদালত চত্বরে দোকান বরাদ্দে ক্ষমতার অপব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানা গেছে, মোকসেদুল রহমান বিচারকের নাম ভাঙিয়ে একাধিকবার সুবিধা নিয়েছেন এবং মাত্র পাঁচ বছরের চাকরি জীবনে অবৈধভাবে সম্পদের মালিক হয়েছেন।

২০১৯ সালে নিয়োগ পরীক্ষায় পাস না করেও উৎকোচের বিনিময়ে মোকসেদুল রহমান ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চাকরি গ্রহণ করেন। এরপর থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সদ্য বিদায়ী বিচারক গাজী দেলোয়ার হোসেনের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করেন। অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি আদালত চত্বরের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছেন এবং স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে বাজার সামগ্রী উপহার হিসেবে বিচারকের কাছে পৌঁছে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

মোকসেদুল রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি মাত্র পাঁচ বছরের চাকুরী জীবনে বিচারকের নাম ভাঙিয়ে একাধিক সম্পদ অর্জন করেছেন। জরাজীর্ণ বসতভিটা থেকে তিনি বর্তমানে দৃষ্টিনন্দন বাড়ির মালিক হয়েছেন, পাশাপাশি কয়েক বিঘা জমিরও মালিক। এছাড়াও, তিনি আদালত চত্বরে অস্থায়ী দোকান ঘরের লিজ নিয়ে তা নিজের আত্মীয়স্বজনদের নামে বরাদ্দ করেছেন। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন যে, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে মোকসেদুল তার স্বজনদের নামে বরাদ্দ করে নিয়েছেন।

মোকসেদুলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ তার স্ত্রী আফরোজা বেগমের প্রতি নির্যাতন। অভিযোগ অনুযায়ী, যৌতুকের জন্য তিনি স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। এমনকি স্ত্রীর অমতে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটান। যৌতুক হিসেবে ৭ লাখ টাকা নেওয়ার পরও তার নির্যাতন বন্ধ হয়নি। পরবর্তীতে ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে তিনি স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেন এবং বিচারকের প্রভাব খাটিয়ে স্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের আদালতে ডেকে জোরপূর্বক তালাক দেন।

আদালতের চত্বরে দোকান বরাদ্দের ক্ষেত্রে মোকসেদুল রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। তার বাবার নামে বরাদ্দ নেওয়া একটি ফলের দোকান পরবর্তীতে কম্পিউটারের দোকানে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এছাড়াও, তার ভগ্নিপতির নামে একটি দোকান ঘর এবং নিকটাত্মীয়ের নামে জজ কোর্ট ক্যান্টিনের লিজ নেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ বাতিল হওয়া দোকানদাররা মানবেতর জীবন যাপন করছেন এবং তাদের অভিযোগ, মোকসেদুল তার প্রভাব খাটিয়ে এই বরাদ্দ বাতিল করিয়েছেন।

ড্রাইভার মোকসেদুল রহমান তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এসব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।” এদিকে, আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ ফরিদুল ইসলাম জানান, “ড্রাইভার মোকসেদুল রহমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে।”

ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ মোঃ আবুল মনসুর মিঞার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি মুঠোফোনে সাড়া দেননি। ভুক্তভোগীরা নতুন বিচারকের কাছে ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে দ্রুত এ বিষয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন।

বর্তমানে ঠাকুরগাঁও বিচারাঙ্গনে ড্রাইভার মোকসেদুল রহমানের কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে এবং স্থানীয় জনগণ তার ক্ষমতার অপব্যবহারের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এ রাজা /টাঙ্গন টাইমস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
HTML Snippets Powered By : XYZScripts.com
https://slotbet.online/
HTML Snippets Powered By : XYZScripts.com