অনেকেই সময় বাঁচানোর জন্য পেঁয়াজ কেটে সংরক্ষণ করেন। কেটে রাখা এসব পেঁয়াজ প্রয়োজন অনুযায়ী পরে রান্নার কাজে ব্যবহার করেন। প্রশ্ন হচ্ছে, কেটে রাখা পেঁয়াজ খাওয়া কি স্বাস্থ্যকর?
উত্তর জানার আগে পেঁয়াজের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিই। পেঁয়াজে আছে ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন), বি-২ (রিবোফ্লাবিন), বি-৩ (নিয়াসিন), বি-৫ (প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড), বি-৬, বি-৯ (ফোলেট) ও ভিটামিন-সি। পেঁয়াজ শরীরে শক্তি জোগায়, বিভিন্ন ভিটামিনের গুণ দিয়ে দেহকে সাবলীল রাখতে কাজ করে, হার্টের কার্যক্ষমতা ও কার্ডিভাসকুলার ফাংশন ঠিকঠাক রাখতে সাহায্য করে।
পেঁয়াজে সালফারের পরিমাণ বেশি। পেঁয়াজের সালফারসমৃদ্ধ উপাদান যেমন প্রোপেনসালফেনিক অ্যাসিড, সালফিউরিক অ্যাসিড, ফ্রুক্টো অলিগোস্যাকারাইড বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি-হ্রাস করে ঠান্ডা, কাশি থেকে রক্ষা করে।
পেঁয়াজে বিদ্যমান সালফারের জন্য পেঁয়াজ কাটলে চোখে পানি আসে। পেঁয়াজ কেটে বাইরে রেখে দিলে সালফার উপাদান বাতাসের সংস্পর্শে এসে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট করে এবং খাবারের বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে যার ফলে মাথাব্যথা, বমি ও পেটব্যথার কারণ হতে পারে।
পেঁয়াজ কেটে রেফ্রিজারেটরে রাখলে, পেঁয়াজের সালফার রেফ্রিজারেটরের ঠান্ডা ও আর্দ্রতার সংস্পর্শে ব্যাকটেরিয়ার দ্রুত বৃদ্ধি করে। শুধু তা–ই নয়, খোসা ছাড়িয়ে আস্ত পেঁয়াজও রাখা উচিত নয়।
অনেকে ভাবেন রং, গন্ধ ও ঝাঁজ ঠিক থাকলে কাটা পেঁয়াজ ব্যবহার করা যাবে। আসলে তা ঠিক নয়। কারণ, পেঁয়াজ কাটার পর দেখা যায় এর আর্দ্রতা খুব তাড়াতাড়ি কমে শুকিয়ে যায়, যার অর্থই হলো এর উপকারী উপাদান সালফার বাতাসের সংস্পর্শে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করছে।
পেঁয়াজ কেটে কীভাবে সংরক্ষণ করব
পেঁয়াজ কেটে সংরক্ষণ না করাই সবচেয়ে ভালো। এমনকি কেটে বা খোসা ছাড়া তা এক রাতের জন্যও রাখা উচিত নয়। যথাসম্ভব রান্না করার সময় পেঁয়াজ কেটে রান্না করাই উচিত। অনেকেই পেঁয়াজ কেটে পলিথিন বা জিপ লক ব্যাগে রাখেন, এতেও ব্যাগের ভেতরে বাতাস এবং পেঁয়াজের রস ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।
তারপরও একান্তই যদি সংরক্ষণ করতে হয়, সে ক্ষেত্রে পেঁয়াজ কেটে বায়ুরোধী কাচের বয়ামে ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
পেঁয়াজের ভর্তাও অনেকেরই পছন্দ। কাঁচা পেঁয়াজের ভর্তা অনেকে সংরক্ষণ করতে চান। সেটা করতে হলেও বায়ুরোধী পাত্রে রেফ্রিজারেটরে সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে।
পেঁয়াজ খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি নানাবিধ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ, তাই যথাসম্ভব পুষ্টিগুণ ঠিক রেখে ব্যবহারের প্রতি সবার সচেষ্ট হওয়া উচিত।
ডা. শিমু আক্তার, সহকারী অধ্যাপক, ফার্মাকোলজি অ্যান্ড থেরাপিউটিকস বিভাগ, জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ।
সূত্র : প্রথম আলো।
https://slotbet.online/