ঢাকা প্রতিনিধি : তাজরিন ফ্যাশনের ভয়াবহ ১১ (এগারো) বছর পার হলেও আজও নিশ্চিত করা যায়নি দায়ী ব্যক্তিদের বিচার, আহত ও নিহত শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসন।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম এর আয়োজনে সকালে জুরাইন কবরস্থানে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, এক মিনিট নীরবতা পালন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে, ব্লাস্ট এর উদ্যোগে ঢাকা, গাজীপুর ও চট্টগ্রামে শ্রমিকদের আইনগত সহায়তা প্রদান ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন সচেতনতামূলক সভা এবং মানববন্ধনের আয়োজন করে। এই অগ্নিকান্ডে প্রাণহানির জন্য দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিরাপদ কর্মক্ষেত্র, কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকের প্রতি হয়রানীমূলক আচরণ বন্ধসহ সকল শ্রমিকের প্রতি বৈষম্য নিরসন, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত শ্রমিকের যথাযথ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের দাবী জানানো হয়।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের বিদ্যমান শ্রম আইনে যে পরিমান ক্ষতিপূরণের অর্থ নির্দিষ্ট করা আছে, তা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে ও বাস্তবতার নিরিখে যথাযথ নয়। ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে নিম্নক্ত বিষয়গুলি বিবেচনায় নেওয়া আবশ্যক- দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে- কর্ম সক্ষমতা বা অবসর গ্রহণ করা পর্যন্তু আয়ের পরিমান; গ্রাচুইটি বা আইনানুগ পাওনাদি; পোষ্য বা পোষ্যদের জীবন- জীবিকার জন্য অনুমিত খরচ; পোষ্যদের মধ্যে কমপক্ষে একজনকে যোগ্যতা অনুযায়ী উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
দুর্ঘটনায় স্থায়ী সম্পূর্ণ অক্ষম শ্রমিকদের ক্ষেত্রে- কর্ম সক্ষমতা বা অবসর গ্রহণ করা পর্যন্তু আয়ের পরিমান; অবসর গ্রহণকালে প্রাপ্য গ্রাচুইটি বা আইনানুগ পাওনাদি; চিকিৎসা বাবদ অনুমিত খরচ; তার ও পোষ্য বা পোষ্যদের জীবন- জীবিকার জন্য অনুমিত খরচ; পোষ্যদের মধ্যে কমপক্ষে একজনকে যোগ্যতা অনুযায়ী উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। দুর্ঘটনায় অস্থায়ী অক্ষম শ্রমিকদের ক্ষেত্রে- তার চিকিৎসা বাবদ অনুমিত খরচ; অক্ষমতার মেয়াদকাল পর্যন্তু মাসিক মজুরী ও আনুসঙ্গিক সুবিধাদি।
এই মর্মান্তিক অগ্নিকান্ডের ১১ বছর হয়ে গেলেও এখনো কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত শ্রমিকের ক্ষতিপুরণ প্রদানে নূন্যতম মানদন্ড নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি । দায়েরকৃত ফৌজদারী মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে যা আগামী ২৫ মার্চ তারিখ ধার্য রয়েছে এবং দুইটি রীট পিটিশন উচ্চ আদালতে শুনানী পর্যায়ে রয়েছে।
ব্লাস্ট শ্রম আদালতে চলমান মামলা সমূহ দ্রুত নিষ্পত্তিতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতির প্রয়োগ, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানী নিরসন, শ্রম আইনে ক্ষতিপূরণ বিষয়ে বিদ্যমান বিধিমালা সংশোধন, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও প্রসুতিকল্যাণ অধিকার সংক্রান্ত বর্তমান বিধানের যথাযথ বাস্তবায়ন, দুর্যোগ কালীন সময়ে শ্রমিকদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে শ্রম আইন ও বিধির প্রয়োজনীয় সংশোধনের দাবী জানাচ্ছে।
https://slotbet.online/