উপজেলা প্রতিনিধি
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও): দীর্ঘ ২২ বছর পর ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে নৌকার মাঝি হলেন পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. ইমদাদুল হক। ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর পীরগঞ্জ-রানীশংকৈল উপজেলা নিয়ে গঠিত ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে কোন নেতাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার মনোনয়ন পেলেন এই নেতা।
আওয়ামী লীগ ঘোষিত ২৯৮ আসনের মনোনীত প্রার্থীর তালিকায় গত রোববার (২৬ নভেম্বর) ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের প্রার্থী হিসেবে এই সাবেক এমপির নাম এসেছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে মোকলেসুর রহমান ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. ইমদাদুল হক দল থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ জয় পান এবং তিনি ধরে রাখেন আসনটি।
পরে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে ইমদাদুল হক দল থেকে মনোনয়ন পেয়েও জোটগত কারণে আসনটি ছেড়ে দিতে হয়। ২০০৮ সালে মহাজোটের মনোনয়ন পেয়ে জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টির একজন করে প্রার্থী থাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ইয়াসিন আলী।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আসনটি আবারও ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হন ইয়াসিন আলী, কিন্তু কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ দেখা দেয়। নির্বাচনে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচন করেন ইমদাদুল হক। আর এই বিভাজনের কারণে তাদের দুজনই বিএনপির প্রার্থী জাহিদুর রহমানের কাছে পরাজিত হন। বিগত নির্বাচনগুলোতে জোটগত কারণে এ আসনটিতে নৌকার প্রার্থীকে নৌকা না দিয়ে শরিক দলের প্রার্থীকে নির্বাচনে পাঠানো হয়েছে বলে জানান আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
নারী সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি সেলিনা জাহান লিটা বলেন, ‘দীর্ঘ ২২ বছর পর আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে মনোনীত করায় আমরা আনন্দিত। আমরা চেয়েছিলাম এখানে আওয়ামী লীগের নেতাকে নৌকা মার্কার জন্য মনোনীত করা হোক।’
রানীশংকৈল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা আনন্দিত এবং সাধারণ মানুষও আনন্দিত। দীর্ঘদিন এখানে কোনো আওয়ামী লীগ নেতা নৌকার প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে চেনা আসনটির কর্মীরা নিষ্ক্রিয় হতে চলেছিল।’
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা ইমদাদুল হক বলেন, ‘তৃণমূলের মানুষ অনেক খুশি। নাম ঘোষণার পর থেকে সাধারণ মানুষের ফোন ধরলেই তাদের আনন্দ অনুভব করছি। এর আগেও নৌকা পেয়েও ছেড়ে দিতে হয়েছিল।’এবারও এমন শঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এবার এমন কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। নৌকাকে বিজয়ী করে আসনটি পুনরুদ্ধার হবে।
https://slotbet.online/