ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ঠাকুরগাঁওয়ে বেসরকারি কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আর এমন অভিযোগ উঠেছে আবুল হোসেন সরকার ডিগ্রি কলেজের গভর্ণিং বডির বিরুদ্ধে।
২০২৫ সালের ২১ জানুয়ারী ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আবুল হোসেন সরকার ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুবাষ চন্দ্র রায় স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, অত্র প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মেয়াদ ১ বছর পূর্তি হওয়ায় নতুন করে বিধি মোতাবেক দায়িত্ব গ্রহণ করা আবশ্যক। সে লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের সভাপতির নির্দেশক্রমে ২৪ জানুয়ারী শুক্রবার সকাল ১০টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের জন্য উপস্থিত হতে বলা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ওই প্রতিষ্ঠানের ৮ জন শিক্ষক উপস্থিত হয়ে সাক্ষাৎকার দেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৯ জুন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ আছে অধ্যক্ষের অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে উপাধ্যক্ষ/জ্যৈষ্ঠতম ৫জন শিক্ষকের মধ্য থেকে যে কোন একজনকে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে। অপরদিকে ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে বলা আছে অধ্যক্ষ/উপাধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে জ্যেষ্ঠতম সহকারী অধ্যাপককে অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে। কিন্তু সম্প্রতি আবুল হোসেন সরকার ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানে কোন প্রজ্ঞাপন বা পরিপত্র অনুসরণ করা হয়নি। গভর্ণিং বডির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খায়রুল ইসলামের নির্দেশে সব কিছু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, সম্প্রতি সালান্দর ডিগ্রি কলেজে উপাধ্যক্ষ কর্মরত থাকা অবস্থাতেও একজন সিনিয়র সহকারী অধ্যাপককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও বালিয়াডাংগী উপজেলার সমীরউদ্দীন স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাজাহারুল ইসলাম সুজন ওই কলেজে জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক থাকা সত্বেও দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঠাকুরগাঁও দুই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলামের পুত্র বলে জানা গেছে। এমন চিত্র জেলার একাধিক কলেজে বিদ্যমান বলে জানান অনেকে।
আবুল হোসেন সরকার ডিগ্রি কলেজের ক্রমানুসারে জ্যৈষ্ঠতম ৫ জন শিক্ষক হলেন- সহকারী অধ্যাপক আয়শা পারভীন বানু, মো : খোদা বকশ, সৈয়দ খালিদ হোসেন, প্রভাষক সুবাষ চন্দ্র দাস এবং প্রভাষক বিউটি রাণী বিশ্বাস । কিন্তু ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে জ্যেষ্ঠতা অনুসরণ না করে ৬ষ্ঠতম প্রভাষক মোঃ দেলোয়ার হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
আবুল হেসেন সরকার ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুভাষ চন্দ্র রায় বলেন, সভাপতির নির্দেশে সব কিছু করা হয়েছে। তবে পরিপত্র ও প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করা হয়নি বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে আবুল হোসেন সরকার ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খোদা বক্শের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিজ্ঞপ্তি অনুয়ারী আমরা চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের ২৪ তারিখ শুক্রবার সকাল ১০ টায় গভর্ণিং বর্ডির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত হই। সেখানে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ১২ টায় সাক্ষাৎকার শুরু করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। আমরা সেখানে ৮ জন উপস্থিত ছিলাম। তিনি আরও জানান নিয়ম অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে দায়িত্ব প্রদান করার কথা কিন্ত কেন তিনি সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকলেন বিষয়টি বোধগম্য নয়।
আবুল হোসেন সরকার ডিগ্রি কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো : খায়রুল ইসলামের সাথে একাধিবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা অফিসার মো: শাহীন আকতার বলেন কলেজের ক্ষেত্রে কি আছে এই মহুর্তে জানা নেই। তবে পরিপত্র বা প্রজ্ঞাপন মানা না হলে, সেটা অনিয়ম।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/