ঢাকা প্রতিনিধি : শুধু সাবেক সেনা প্রধান আজিজ আহমেদ এবং পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের বিচার করলে হবে না, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদদাতাদেরও বিচার করতে হবে জানিয়েছেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
শনিবার (২৫ মে) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন।
‘‘সীমাহীন লুটতরাজ, দুঃশাসন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মূল্যস্ফীতি ও আর্থিক অনিয়মের প্রতিবাদ’’ শীর্ষক এই বিক্ষোভ সমাবেশ এর আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন অতি সম্প্রতি দেশে অনেক ঘটনা ঘটেছে। সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের অনিয়ম-দুর্নীতি বিষয়টি সামনে এসেছে। একজনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, আরেক জনের সম্পদ ক্রোকে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
‘কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো এদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা কারা? শুধু এদের বিচার করলে হবে না। এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদদাতাদেরও বিচার করতে হবে বলে জানান মোস্তফা জামাল হায়দার।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বায়ন জানিয়ে তিনি বলেন, এই ফ্যাসিস্ট-জুলুমবাজ সরকারকে হটাতে সবাইকে রাজপথে নামতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। আমি বিশ্বাস করি আমাদের আন্দোলন সফল হবে।
বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে দেশের মানুষ অতীষ্ঠ ও অসহায়। তারা এই ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে রক্ষা পেতে চায়। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই সরকারের পতন ঘটানোর লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের সভাপতি সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, আজকে বাংলাদেশ ডুবন্ত নৌকায় আসীন। চারিদিকে হাহাকার। আমাদের গর্বের প্রতিষ্ঠান সেনাবাহিনীকে পঙ্গু করা হচ্ছে। বাহিনীর সাবেক প্রধান আজিজ আহমেদ দুর্নীতির দায়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন। পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তাদের দুর্নীতির দায় তো সরকারের ওপর বর্তায়। সুতরাং শুধু তাদের বিচার করলে হবে না, আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদদাতাদেরও বিচার করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে দশ শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতি। ডলার ও রিজার্ভ সংকটের কারণে এটি হয়েছে। এরমধ্যেই রিজার্ভ চুরি হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব কারণেই আমরা ফ্যাসিস্ট ও ভোট ডাকাত আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে চাই। একইসঙ্গে প্রতিবেশি দেশের ভেজাল পণ্য বয়কট এবং চলমান আন্দোলনে সকলকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানাই।
জমিয়তে উলামা ইসলামের মহাসচিব মহিউদ্দিন ইকরাম বলেন, ‘চুরি-ডাকাতির মহোৎসবে ব্যাংক খালি হয়ে গেছে। রিজার্ভ নেই। ডলার সংকট। এখান থেকে বাঁচতে হলে এই সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে হবে। আজিজ-বেনজীরের শাস্তি হওয়া সময়ের দাবি। সেই সঙ্গে তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদেরও শাস্তি দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা অবিলম্বে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। তার আগে খালেদা জিয়াসহ গ্রেফতার হওয়া নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দিতে হবে।
জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিমের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নবাব আব্বাস আলী খান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির এডভোকেট জাকির হোসেন, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল করিম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির আবু হানিফ, বাংলাদেশ এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম এ বাশার, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মুফতি জাকির হোসেন, জাতীয় দলের বেলায়েত হোসেন শামীম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির যুগ্ম মহাসচিব শরিফুল ইসলাম, জাতীয় ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক ফয়েজ আহমেদ, ছাত্র জমিয়তের আহ্বায়ক খালেদ মাহমুদসহ অনেকে।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/