• মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীর গায়ে আগুন দিলেন স্বামী

Reporter Name / ১৯৭ Time View
Update : শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০২৪

মো: রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও: যৌতুকের জন্য স্বামীর দেওয়া ডিজেলের আগুনে পুড়ে তিনদিন ধরে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন গৃহবধূ লতা বেগম (২৫)। তাঁর শরীরের প্রায় অর্ধেক অংশেই পুড়ে গেছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মেয়ের চিকিৎসার খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন দরিদ্র মা-বাবা।

তিন সন্তানের জননী দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া ওই নারীর উন্নত চিকিৎসা আটকে আছে আর্থিক সংকটে। এ অবস্থায় হাসপাতালের শয্যায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন লতা।

সোমবার (১ জুলাই) সকালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাকোয়া এলাকার বারোঘড়িয়া গ্রামে এঘটনা ঘটে পাষন্ড স্বামী মহব্বর আলী ওই গ্রামের শামসুল হকের ছেলে। তবে শ্বশুর-শাশুড়ির সামনেই লতা বেগমের শরীরে ডিজেল ঢেলে দেয় মহব্বত আলী।

এগিয়ে আসেনি কেউ।এতে দগ্ধ হয়ে শরীরের বেশকিছু অঙ্গ পুড়ে যায়। এ ঘটনার পর মহব্বতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, আট বছর আগে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাকোয়া এলাকার বারোঘড়িয়া গ্রামের শামসুল হকের ছেলে মহব্বর আলীর সাথে বিয়ে হয় লতা বেগমের এই দম্পতির এক পুত্র ও দুই কণ্যা সন্তান রয়েছে। লতা বেগমকে না জানিয়ে চার মাস আগে মহব্বত আলী দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর যৌতুক ও তালাকের জন্য নিয়মিতই লতার উপর চলতো নির্মম নির্যাতন। গেল সোমবার সকালে মহব্বর যৌতুকের মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে ঘরে থাকা ডিজেল স্ত্রী লতার শরীরে ঢেলে প্রকাশ্যে আগুন ধরিয়ে দেয় পাষন্ড স্বামী মহব্বর আলী। এসময় বাড়িয়ে থাকা পাশে থাকা মহব্বরের মা-বাবা এগিয়ে আসেনি। পরে স্থানীয়রা ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

স্বজনদের অভিযোগ তিন সন্তান ও স্ত্রীকে রেখে মহব্বত দ্বিতীয় বিয়ে করায় প্রায়ই নির্যাতন চালাতো তার এমন কর্মকান্ডে কঠিন শাস্তির দাবি করেন স্বজন ও স্থানীয়রা।

হাসপাতালে গৃহবধূ লতার চোখ দিয়ে কেবলই পানি ঝরছিল। তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে লতা জানায়, অনুমতি না নিয়ে ১২ বছর আগে বিয়ে হওয়া এক নারীকে বিয়ে করে আমার স্বাম। তারপর আমাকে যৌতুক ও তালাক দিতে নানা ভাবে নির্যাতন করে। শেষ পর্যায়ে এসে ডিজেল ঢেলে মেরে ফেলতে চেয়েছিল কিন্তু আল্লাহ বাচিয়ে রেখেছেন। তবে বেঁচে লাভ কি সন্তানদের কে দেখবে। আমার বাবা মায়ের কিছু নেই। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছিনা। যদি কারো দয়া হয় সহযোগিতা করবেন। আমি আমার স্বামী ও ওই নারীর বিচার চাই।

ঠাকুরগাও জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার  মোঃ রকিবুল আলম জানান, শরীর পুড়ে যাওয়া নারীকে হাসপাতাল থেকে সকল সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।তবে তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। অর্থের অভাবে করাতে পারছেনা।

এ বিষয়ে বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাম্মেল হক মুঠোফোনে জানান, যৌতুক ও দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে কথাকাটি হতো তাদের মধ্যে।মহব্বত এসব বিষয়ে প্রায় নির্যাতনও করতো বলে অভিযোগ রয়েছে। শরীরে তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনায় মহব্বত আলীসহ কয়েকজনের নামে একটি মামলা করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। পরে স্বামী মহব্বত আলীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ ইসলাম/ টাঙ্গন টাইমস 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/