• রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ইউপি ভূমি সহকারী কর্মকর্তার দুর্নীতি তদন্তে, কর্মকর্তা নিয়োগ ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে দুই স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু আদিবাসীদের নিয়ে দিনব্যাপী ফুটবল টুনামেন্ট অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক চর্চার আরেক প্রাণ পুরুষ রবিউল আজম ঠাকুরগাঁয়ে একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের মানবেতর জীবন বন্যার্তদের ৪ লাখ টাকা দিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের শিক্ষার্থীরা খুলনা জুট ওয়ার্কার্স ইনষ্টিটিউটের সম্পত্তি  রক্ষায় সভা অনুষ্ঠিত এমপি’র ছোঁয়ায় শত কোটি টাকার মালিক মুক্তা রাণী ! বন্যাদুর্গত এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দ্রুত নির্ধারণপূর্বক পুনর্বাসনের আহবান কৃষি উপদেষ্টার শত কোটি টাকার মালিক কে এই ন্যাংড়া স্বপন !

লক্কর ঝক্কর গাড়িতে ভরপুর ঠাকুরগাঁও, মামলার শিকার দূর্বলেরা

Reporter Name / ৪৪৭ Time View
Update : রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪

সম্পাদক, টাঙ্গন টাইমস

সারাদেশের ন্যায় ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক চৌকি বসিয়ে সড়কে যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেলের বৈধ কাগজপত্র না থাকায় নিয়মিত মামলা দিয়ে আসছেন ট্রাফিক পুলিশ। আর এই মামলার বেশির ভাগ শিকার হচ্ছেন নিরীহ ও দুর্বল মানুষেরা, এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

তবে ট্রাফিক পুলিশ বলছে, সামাজিক ভাবে জনমানুষের কাছে হেয় করার জন্য এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে। গাড়ির বৈধ কাগজপত্র না থাকা এবং ট্রাফিক আইন না মানায় পুলিশ আইন অমান্যকারিদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে।

সম্প্রতি এক মটরসাইকেল আরোহি অসুস্থ মায়ের ঔষুধ কিনতে গিয়ে ট্রাফিক পুলিশের রোষানলে পড়েন। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারলে। তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়। আর এমন এক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে সর্বমহলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। অনেকে আবার ট্রাফিক পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন মন্তব্যও করে।

পরে বিষয়টি সংবাদ কর্মীদের নজরে আসলে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার হয়। এতে কের পুলিশ প্রশাসন এক ধরনের চাপের মধ্যে পরে। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার চলতি মাসের সোমবার (২ এপ্রিল) সংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি জানান, ওই যুবক মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এ সব ঘটনা ঘটিয়েছে। সে ওষুধ কেনার কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি। সু-পরিকল্পিত ভাবে পুলিশকে হেয় করার জন্যই ভিডিও করে অপপ্রচার চালানো হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের প্রায় প্রতিটি সড়কে অবৈধ পার্কিং, যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা, গণপরিবহনের বিশৃঙ্খলার কারণে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। ট্রাফিক প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার কারণে যানজট নিরসনে গুরুত্ব না দিয়ে মোটরসাইকেল চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দিতেই বেশি তৎপর রয়েছেন তারা।

সন্ধার পরে পুরাতন বাসষ্ট্যান্ডে গেলে দেখতে পাওয়া যায় গাড়ির এক দীর্ঘ লাইন। রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে।দক্ষিণে দশতলা ভবন থেকে শুরু করে বাসষ্ট্যান্ড গোলচক্করসহ উত্তর-পূর্ব-পশ্চিমে পুরো এলাকা যানজোটে ভরে যায়। এ যেন নিত্তনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিনত হয়েছে। তাহলে এই যানজট নিরসনের দায়িত্ব কার ?

সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখা যায়, ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা মোটরসাইকেল আরোহীদের আটক করে গাড়ির যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই নিয়ে ব্যস্ত। এমন সময় ইট ও খোয়া বোঝাই দুইটি পাওয়ার টিলার হঠাৎ মাঝ রাস্তায় এসে বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হওয়া গাড়ি দুটিকে দ্রæত সড়িয়ে দেওয়ায় পথচারীদের তোপের মুখে পড়েন ট্রাফিক সার্জেন্ট। পরে তাদের আটক করা হয়।

ঠাকুরগাঁও শহর এক সময় ছোট শহর থাকলেও এখন দিন দিন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঠাকুরগাঁও শহর থেকে অন্যান্য উপজেলা গুলোতে যাওয়ার একমাত্র পথ বঙ্গবন্ধু সড়ক। অন্য কোন বাইপাশ সড়ক না থাকায় প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। পবিত্র ঈদ এবং পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে এই যানজট আরও তীব্রতর হয়েছে।

অপরদিকে চৌরাস্তা সংলগ্ন এলাকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং আদালত চত্বর। চত্বরে আরও রয়েছে ঠাকুরগাঁও সদর থানা, কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। চত্বরের চারিদিকে ৬টি গেট। গেট গুলো এক সময় অবমুক্ত ছিল। কিন্তু গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসন নিরাপত্তার স্বার্থে একটি বাদে সব গুলো গেটই বন্ধ করিয়ে দেন। এতে করে যানজটের মাত্রা আরও তীব্রতর হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্হিতি বিবেচনায় নিয়ে অন্তত দু-একটি গেট খুলিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় ব‍্যবস্হা করবেন।

কিন্তু নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার কয়েকমাস গত হয়ে গেলেও আজও পর্যন্ত সেই গুলো আর খোলা হচ্ছে না। এব্যাপারে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা, আইনজীবী, সুশীল সমাজের প্রতি, সাংবাদিকসহ অনেকে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলেছেন কিন্তু জেলা প্রশাসক গেট গুলো অবমুক্ত করতে কোন ভাবেই সম্মত নন।

মোটরবাইকেল চালক রনি জানান, গাড়ির কাগজটা সঙ্গে না থাকায় ১৫ হাজার টাকার মামলা দিয়ে ছিলো ট্রাফিক পুলিশ। পরে কাগজপত্র দেখিয়েও কাজ হয়নি। এটা রীতিমত বাড়াবাড়ি। যেনো বাইক একটি অবৈধ যানবাহন। রাস্তায় উঠলে গলায় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে চালাতে হবে।

সাগর নামে এক মটরসাইকেল আরোহী বলেন, আজ পর্যন্ত একটা বাস, ট্রাক, নসিমন, পাওয়ার টিলারকে আটক করতে দেখা যায়নি। যত আইন প্রায়োগ ট্রাফিকের শুধু বাইকের ওপর। চৌরাস্তা ও রোডে অটোরিক্সা রাস্তা বন্ধ করে লোক ওঠানোর জন্য দাঁড়ায়। এর জন্য প্রতিদিন জ্যাম লেগেই থাকে। সেগুলো ট্রাফিক পুলিশ দেখে না। এছাড়াও অবৈধ ভাবে নসিমন, করিমন পাওয়ার টিলার সহ অনেক যানবাহন চলাচল করে চৌরাস্তা দিয়ে সেগুলোও দেখে না। আইন প্রয়োগ করেন ভাল কথা কিন্তু সবার জন্য সমান ভাবে করুন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক চালক বলেন, তিনি বলেন, জরুরী কোন কাজে গেলে পুলিশ বার বার রাস্তায় থামিয়ে গাড়ির কাগজপত্র দেখে। অনেক সময় ট্রাফিক জোর করে মামলা দিয়ে বলে ছোট একটি মামলা দিয়েছি। অনেক সময় দেখা গেছে, ফিটনেস বিহীন, দুর্বল গাড়িগুলো রাস্তায় গেলেও ট্রাফিক পুলিশ তাদের দেখে না। তারা আমাদের মতো শ্রমিক, দিন মজুর এবং দুর্বলদের বেশি মামলা দিচ্ছে। প্রভাবশালীদের নয় দুর্বলদের বেশি মামলা দেয় ট্রাফিক পুলিশ।

ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. মাসুদ হাসান বলেন, আইন সবার জন্য সমান, চালকরা অন্যায় বা অনিয়ম করলে আমরা মামলা দিয়ে থাকি। রাস্তায় অনিয়ম করলে মামলা দেওয়া হয়। কোনো গাড়িকে টার্গেট করে মামলা দেওয়া হয় না।

না প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য গাড়ির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে ফিটনেসবিহীন ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, যা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। অনভিজ্ঞ ও মেয়াদবিহীন লাইসেন্সের চালক নেমে পড়ে সড়কে। এ সব কারণে মামলার সংখ্যা বাড়ছে। যার কারণে চালকরা বলছে, এ সব হলো অতিরিক্ত মামলা।

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, যে পরিস্থিতি তৈরি করা হয় তা পুরোটাই ছিল সাজানো। সেই ব্যক্তি তার মায়ের ব্যবস্থাপত্র দেখাতেও ব্যর্থ হন বলে দাবি জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তার। যে ভিডিওটি ছড়ানো হয়েছে তা অংশ বিশেষ বলেও দাবি করেন তিনি। যা প্রকৃতপক্ষে উদ্দ্যেশ্য প্রনোদিত।

তিনি আরো বলেন, পুলিশকে হেয় করার জন্য এই প্রচারণটা চলেই আসছে। পুলিশ ইচ্ছা করে মামলা দেয় না। চালকরা অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

সম্পাদকীয় মন্তব্য, সকলের প্রত্যাশা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যানজট মুক্ত হবে ঠাকুরগাঁও শহর। যানজটের মূল কারণ গুলো চিহ্নিত করে করনীয় কি তা চিহ্নিত করবেন ট্রাফিক পুলিশ। আর এই যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখবেন স্থানীয় প্রশাসনসহ পৌর প্রশাসন।


আপনার মতামত লিখুন :

One response to “লক্কর ঝক্কর গাড়িতে ভরপুর ঠাকুরগাঁও, মামলার শিকার দূর্বলেরা”

  1. Very nice info and right to the point. I don’t know if this is
    really the best place to ask but do you folks have
    any thoughts on where to employ some professional writers?
    Thanks 🙂 Escape room

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/