বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগারে থাকায় তার সঙ্গে প্রতিনিয়ত চলা ‘বাগ্যুদ্ধের’ অনুপস্থিতি উপলব্ধি করছেন বলে জানালেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
কারাগারে থাকায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মিস করছেন কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘না… থাকলে (বাইরে) ভালো হতো। এই যে… মানে এটা… এমন একটা বিষয় যে কথাবার্তার মধ্য দিয়ে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা। এতে গণতন্ত্রই লাভবান হয়। এখন এখানে আইনের ব্যাপার যখন বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তখন তো করণীয় কিছু নেই। থাকলে ভালো হতো। উনি আমার কথার জবাব দেন, আবার আমি তার কথার জবাব দিই। এটা তো এক ধরনের… এটা একটা ইন্টার-অ্যাকশন এক্সচেঞ্জ। এটা একটা ফাইন এক্সচেঞ্জ।’
মাঠের রাজনীতিতে বিএনপি মহাসচিবের শূন্যতার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি অভ্যাসগতভাবে মিস করা বলি, ওইভাবে বলতে চাই না। আমি বলছি, ওনার সঙ্গে প্রতিদিনই যে কথাবার্তা, যে কাউন্টার হয়, বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনিও আক্রমণ শানিত করেন। তো সেটার জবাব দিতে ভালো লাগে। আক্রমণ শানিত করলে তার সঠিক উত্তরটাও আমাদের দিতে হয়। সেদিকটা অবশ্যই এখন অনুপস্থিত। এটা ঠিক। মিস-টিস এগুলা বলতে চাই না।’
এ সময় বিএনপির সিনিয়য়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদকে নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এই যে বিএনপির বর্তমান অনাবাসিক প্রতিনিধি রিজভী আহমেদ ১০-১২ জন লোক নিয়ে বের হন। কি করে, অসুস্থ একটা লোক। রিজভীকে দেখেও আমরা না দেখার ভান করি।’
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সারাদেশে আগুন-সন্ত্রাস করে বিএনপি কোন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, এটা আমাদের প্রশ্ন। এটা নির্বাচনবিরোধী ষড়যন্ত্র। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে নাশকতার মাধ্যমে বানচাল করা।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ তারা গভীর ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, তারা কিছু প্ল্যান তৈরি করে রেখেছে, তারা চায় গুপ্ত হামলা, গুপ্ত হত্যা। আজ বাসে আগুন দিয়ে নাশকতা সৃষ্টি– এসব অপকর্ম বিএনপির দোসররা করতে চায়। এর জন্য আমরা সতর্ক পাহারা আরও জোরদার করেছি।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের দায়িত্ব পালন করবে। এ নির্বাচন আমাদের সফল করতে হবে, শান্তিপূর্ণ করতে হবে। ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য সমমনা সবার সঙ্গে আমরা বসছি, আলাপ আলোচনা করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষকে ভয়ভীতির মধ্যে রাখার চক্রান্ত করছে বিএনপি। এর মধ্যেই ব্যাপক ভোটার উপস্থিত করতে হবে। তারা যতই নাশকতা করুক, মানুষ নির্বাচনমুখী, মানুষ ভোট দিতে উন্মুখ। উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অন্যরা ভেবেছিল বড় দল নেই, নির্বাচনের পরিবেশ ম্লান হয়ে যাবে, ভোটে জাগরণের ঢেউ থাকবে না। নির্বাচনকেন্দ্রিক উৎসবমুখর পরিবেশ অব্যাহত রয়েছে। ৭ জানুয়ারি ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতিতে ভালো নির্বাচন হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা এ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে আরও পারফেক্ট করব, আমাদের গণতন্ত্র বিকাশমান। পৃথিবীর কোথাও গণতন্ত্র পারফেক্ট নয়। আমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি যাই আছে, এসব দূর করে আমরা গণতন্ত্রের পথকে আরও মসৃণ করব।’
১৪ দলীয় জোট নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জোট নিয়ে বিভিন্ন ধরনের শঙ্কা, গুজব আছে। আমরা সতর্ক আছি। গুজব, গুঞ্জন, সন্ত্রাস, সহিংসতা আমাদের বিভ্রান্ত করতে পারবে না। আমরা বিচলিত হব না, আমরা সব জেনে শুনেই নির্বাচনে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে, আমাদের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পথ নেই। নির্বাচনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতির মাধ্যমে নির্বাচন বিরোধী অপতৎপরতার জবাব দেব।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক সামসুন্নাহার চাঁপা, উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
আরএম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/