টাঙ্গন ডেস্ক : প্রাণিসম্পদ খাতে উৎপাদন বাড়লেও প্রাণী চিকিৎসাসেবায় নেই তেমন অগ্রগতি। উপজেলা পর্যায়ে অধিকাংশ হাসপাতালই জরাজীর্ণ ও লোকবল সংকটে। ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল থাকলেও ভেটেরিনারি অফিসার থাকেন মাসে একদিন। বাকীদিন বাড়িতে বসেই কাটান তিনি। এছাড়াও রয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক ও ওষুধের সংকট। ফলে প্রাণী হাসপাতাল থেকে তেমন সুফল পাচ্ছেন না গবাদিপশুর মালিক ও খামারিরা।
পশুর মালিক ও খামারিদের অভিযোগ, প্রাণী হাসপাতালে গবাদিপশুর চিকিৎসাসেবা নামে মাত্র। জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে চিকিৎসকের দেখাই মেলে না। প্রায় সময় এসে ঘুরে যেতে হয়।
জেলা প্রাণী সম্পদের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা ভেটেরিনারি অফিসার (ভিও) ডা: তাজুল ইসলাম জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে যোগদান করেন ২০২৪ সালের জুন মাসে। কিন্তু তিনি যোগাদানের পর থেকে ঠিকমত হাসপাতালে আসেন না। একই অভিযোগ ভেটেরিনারি সার্জন ডা: মামুন শাহের বিরুদ্ধে। দৈনিক কর্মচারি হাজিরা খাতায় উর্ধতন কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর দেওয়ার কথা থাকলেও ২০২৪ সালের জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত কোন স্বাক্ষর পাওয়া যায়নি।
২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর প্রাণী সম্পদের রংপুর বিভাগীয় পরিচালকের কাছে পাঠানো চিঠিতে জানা গেছে, ভেটেরিনারি অফিসার (ভিও) ডা: মো. তাজুল ইসলাম দীর্ঘকাল কর্মস্থলে অনুপস্থিত। গত সেপ্টেম্বর মাসে ১দিন এবং অক্টোবর মাসে ১ দিন মাত্র অফিসে উপস্থিত ছিলেন। দায়িত্ব পালনে তীব্র অনিহা ও সমন্বয়হীনতায় হাসপাতালের কার্যক্রমে ধীরগতি এবং প্রাণী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গবাদিপশুর মালিক ও খামারিরা। তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মেরও অভিযোগ রয়েছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের সিংগীয়া গ্রামের মোশারফ হোসেন বলেন কিছুদিন আগে আমাদের গ্রামে অনেক গবাদীপশু মারা গেল। কোন চিকিৎসকের দেখাই পেলাম না। আউলিয়াপুর ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর আলম বলেন তাঁর বাসায় ৩টি গরু এবং শতাধিক হাঁস-মুরগি, কবুতর আছে। জেলা প্রাণী হাসপাতালে গিয়ে কোন সেবাই পাওয়া যায় না। গড়েয়া ইউনিয়নের হুমায়ুন কবির বলেন প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে গিয়ে কি লাভ। চিকিৎসকের তো দেখাই মেলে না। একই কথা বলেন পৌর শহরের উম্মে নাজনীন, আব্দুল আজিজসহ অনেকে।
ঠাকুরগাঁও জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালের ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা: তাজুল ইসলাম ফোনে অনুপস্থিতির কথা স্বীকার করে বলেন অনেকের সাথে পরিচয় হয়েছে কিন্তু আপনার সাথে পরিচয় হয়নি। স্বাক্ষাতে কথা হবে। আপনি কোথায় আছেন জানতে চাইলে বলেন রংপুরে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাবের ইসলাম জিমি বলেন, বিষয়টি খুবই দু:খ জনক। জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে ভেটেরিনারি অফিসারের বিষয়টি তিন মাস জেনেছিলাম। হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকায় গবাদিপশুর মালিক ও খামারিরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: ইজহার আহমেদ খান বলেন তিনি আমার সম পদে চাকুরী করেন। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কোন সুযোগ নেই। তবে প্রাণী সম্পদের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক বরাবরে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি পাঠিয়েছি।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/