হিলি (দিনাজপুর) সংবাদদাতা: দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার গেল মাসে চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করে। ১১ নভেম্বর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে শুরু হয় চাল আমদানি। এতে এক বুক আশায় ছিল নিন্ম ও মধ্য বিত্তরা। কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি। আমদানি শুরুর প্রায় একমাস হলেও পাইকারী ও খুচরা পর্যায়ে নেই এর প্রভাব। বাজারে আগের সেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরণের চাল।
আমদানিকৃত স্বর্না জাতের চাল ৫০ টাকার নিচে নামার কথা থাকলেও বন্দরে বিক্রি হচ্ছে ৫১-৫২ টাকায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা জানান আমদানিকৃত চালের তুলনায় দেশীয় চালের দাম কম। তাই বন্দর থেকে চাল কিনতে আগ্রহ কম। দেশের বাজারে চালের দাম সহনীয় রাখতে শুল্কমুক্ত চাল আমদানির উদ্যোগকে স্বাধুবাদ জানিয়ে ব্যাসায়ীরা জানান, এমন উদ্যোগ আরো অন্তত দু’ মাস আগে নিলে আমদানির সুফল মিলতো। কেননা নভেম্বর মাসে কৃষকের উৎপাদিত ধান ঘরে আসতে শুরু করেছে।
আমদানিকারকরা আরো জানান, চালের শুল্ক প্রত্যাহার করায় এর সুয়োগ নিয়েছে ভারতের রপ্তানিকারকরা। এমন উদ্যোগে ভারতের ব্যাবসায়ীরা চালের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। তাদের অভিযোগ কোন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সরকার যখন কম মূল্যে ভোক্তাদের কাছে পৌছে দিতে আমদানিতে শর্ত শিথীল করে তখন ভারত সেই পণ্যের রপ্তানি মূল্য বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে সরকার এমন উদ্যোগ নিলে এর সুফল ভোক্তা পর্যায়ে মিলেনা। চাল আমদানির ক্ষেত্রে সেই কাজটি করেছে দেশটির ব্যাবসায়ীরা। আগে তারা ৩৬০ ডলার মূল্যে চাল রপ্তানি করলেও বাংলাদেশ সরকার চালের শুল্ক মৌকুফ করলে তারা টন প্রতি ৬০ ডলার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। অথাৎ ৪২০ ডলার মূল্যে চাল রপ্তানি করছেন।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানে মেসার্স আফিফ এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক জানান, সরকার দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুল্কমুক্ত চাল আমদানি করার উদ্যোগ গ্রাহণ নি:স্বন্দেহে মহৎ উদ্যোগ। কিন্তু আমদানিতে সরকার শুল্ক প্রত্যাহার করায় ভারত রপ্তানিমূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভারত থেকে চাল আমদানি না করলে চাহিদার তুলনায় যোগান থাকবেনা। ফলে ঘাটকি দেখা দিবে। সেই কথা ভেবে তারা বেশী দামে চাল রপ্তানি করছেন। আগে ৩৪০ ডলার তাদের রপ্তানি মূল্য ছিল এখন ৪২০-৪৩০ ডলার মূল্যে রপ্তানি করছেন। তিনি আরো বলেন, ৩২০ ডলার মূল্যে চাল আমদানি করা গেলে দাম কেজিতে অন্তত ৬-৮ টাকা দাম কমতো।
হিলি স্থলবন্দরে চাল কিনতে আসা ব্যাবসায়ী মুকিবুল ইসলাম জানান, আমদানির খবরে বন্দরে চাল কিনতে এসেছি। কিন্ত এখানে এসে দেখি দাম বেশী। স্বর্ণা জাতের চাল এখানে ৫২ টাকা। এর থেকে ভালো মানের দেশীয় স্বর্ণা-৫ জাতের চাল বাজারে ৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তাই চাল না কিনে ফিরে যাচ্ছি।
হিলি স্থলবন্দরের তথ্যমতে ১১ নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৮৭৭ টন চাল আমদানি করা হয়েছে।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/