টাঙ্গন ডেস্ক : অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে সারা দেশে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯২ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ১৪ জন পুলিশ সদস্য। বাকিদের মধ্যে আন্দোলনকারীরা ছাড়াও রয়েছেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, বিএনপি, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী। রয়েছেন সাংবাদিকসহ অন্য পেশাজীবীরাও।
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রোববার (৪ আগস্ট) সকালেই কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত অসহযোগ কর্মসূচি শুরু হয়। এ দিন রাত পর্যন্ত ঢাকাসহ ১৮ জেলায় অন্তত ৯২ জন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। দিনভর এসব এলাকায় সংঘর্ষ-সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জে পুলিশসহ নিহত ২৩
কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দ্বিতীয় দফায় চলমান অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় ১৩ পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। পুলিশ সদর দফতর এ তথ্য জানিয়েছে।
অন্যদিকে, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ-তাড়াশ ও সিরাজগঞ্জ সদরে সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রায়গঞ্জ নিহতদের মধ্যে পাঁচ জন আওয়ামী লীগের এবং সদরের তিন জন বিএনপির নেতাকর্মী বলে জানা গেছে। এ ছাড়া রায়গঞ্জে এক সাংবাদিকও নিহত হয়েছেন।
রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম তৌহিদ ছয় জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় তিন জন নিহতের দাবি করেছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু।
রায়গঞ্জে নিহতরা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ছারওয়ার লিটন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ওরফে ইলিয়াস, সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনায়েন ওরফে টিটু, দৈনিক খবরপত্রের রায়গঞ্জ প্রতিনিধি প্রদীপ কুমার ভৌমিক।
সিরাজগঞ্জ শহরে সংঘর্ষে নিহতরা হলেন- জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রঞ্জু রহমান, যুবদল কর্মী সুমন শেখ, ছাত্রদল কর্মী আব্দুল লতিফ।
এ ছাড়া পুলিশ, আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে শাহজাদপুর উপজেলায় নিহত হয়েছেন একজন। তিনি খুকনী ইউনিয়নের শাহজাহান আলীর ছেলে ইয়াহিয়া।
ঢাকায় নিহত ১০
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে পালন হওয়া অসহযোগ আন্দোলনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগসহ সরকারদলীয় বিভিন্ন সংগঠন ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে রাত পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এসব সংঘর্ষে আহত ২৪০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৬৮ জনকে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন— আব্দুল্লাহ সিদ্দিকি (২২), আনোয়ারুল ইসলাম, তাহিদুল ইসলাম (২২), রমিজ উদ্দিন রুপ (২৪), সেলিম (৪০) ও ভ্যানচালক রিয়াজউদ্দৌলা (৩৬)। বাকি চারজনের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
নিহতদের মধ্যে হাবিবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সিদ্দিকি (২২) রোববার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে জিগাতলা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। বিকেল ৪টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার সময় নিহত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুল ইসলাম। ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন।
রোববার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন তাহিদুল ইসলাম (২২)। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তহিদুলের বাড়ি বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায়। থাকতেন মহাখালী ডিওএইচএস এলাকায়। সেখানে ডি৮ কনসালট্যান্টস লিমিটেডে জুনিয়র অফিস সহকারী হিসেবে চাকরি করতেন।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় ডান চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষার্থী রমিজ উদ্দিন রুপ (২৪)। তিনি দ্বিতীয় বর্ষের পর আর পড়ালেখা করেননি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢামেকে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি হাজারীবাগের রায়েরবাজার এলাকায় থাকতেন।
রোববার সকাল ১১টার দিকে শাহবাগে ইটের আঘাতে আহত হন সেলিম (৪০) নামে এক ব্যক্তি। ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসধীন অবস্থায় বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মৃত্যু হয় তার। বিকেলে যাত্রাবাড়ী টনি টাওয়ারের সামনে গুলিবিদ্ধ হন ভ্যানচালক রিয়াজউদ্দৌলা (৩৬)। তাকে আহত অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাত ১০টার দিকে।
এর বাইরে অজ্ঞাত আরও চারজন নিহত হয়েছেন রোববার। সন্ধ্যার দিকে পথচারীরা আনুমানিক ১৮ বছরের এক তরুণকে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জিগাতলা এলাকায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনুমানিক ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরকে ঢামেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আনুমানিক ২২ ও ২৫ বছর বয়সী আরও অজ্ঞাত দুজনকেও নেওয়া হয় ঢামেক হাসপাতালে। চিকিৎসক মৃত্যু নিশ্চিত করলে হাসপাতালে নথিভুক্ত না করেই মরদেহ দুটি নিয়ে আন্দোলনকারীরা শহিদ মিনারের দিকে চলে যান।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ঢামেক হাসপাতালে এ পর্যন্ত ৯ জন মারা গেছেন বা তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি মরদেহ নথিভুক্ত না করেই নিয়ে গেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া রাত ৯টা পর্যন্ত ২৪০ জন আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন এই হাসপাতালে। এর মধ্যে ৬৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ।
লক্ষ্মীপুরে নিহত ৮
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষে আট জন নিহত ও দুই শতাধিক আহত হয়েছেন। এদিন লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে নিহতরা হলেন- কলেজছাত্র কাউসার, আফরান, সাব্বির ও মিজান। এ ছাড়া যুবগীলগের নিহতরা হলেন, হারুন মেম্বার, মো. সুমন, রিয়াজ পাটওয়ারী ও অজ্ঞাত একজন। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অরূপ পাল তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
এদিন জেলা আওয়ামীলীগের অস্থায়ী কার্যালয়, এমপি নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এবং সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন টিপুর বাসভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া প্রেসক্লাব, রোজ গার্ডেন রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা।
নরসিংদীতে নিহত ৬
আন্দোলনকারীদের মিছিলে গুলি চালানোর জেরে নরসিংদীর মাধবদীতে গণপিটুনিতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের ছয় নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে মাধবদী পৌরসভার বড় মসজিদ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার চরদিগলদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন শাহীন (৪০), নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন (৩৮), জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শ্রমিক লীগ নেতা মনিরুজ্জামান ভূইয়া ওরফে নাতি মনির (৪২), শ্রমিক লীগ নেতা আনিছুর রহমান সোহেল (৪০), আওয়ামী লীগ নেতা কামাল হোসেন (৩৮) এবং আওয়ামী লীগ কর্মী গোলাপ (৪০)।
স্থানীয়রা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল থেকেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাধবদী এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। এ সময় সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়। এতে ছয় আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় অন্তত ১০ জন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের ধাওয়া করে বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তারা মাধবদীর বড় মসজিদ এলাকায় অবস্থান নিলে সেখানে গিয়ে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই এক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ছয় জন নিহত হন।
মাধবদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, প্রতিপক্ষের হামলা ও গণপিটুনিতে আওয়ামী লীগের ছয় নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। আমরা তাদের পরিচয় নিশ্চিতের চেষ্টা করছি।
সিলেটে নিহত ৫
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিজিবি ও পুলিশের পৃথক সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ এলাকার তিনজন ও উপজেলা সদরের চৌমুহনীতে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন দুজন। এসব সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অনেকে।
রোববার ২টা থেকে উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে তিনজন নিহত হয়েছেন। গোলাপগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুদর্শন সেন উপজেলার বারকুট গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩) ও উপজেলার শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদের (১৮) মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চিন্ত গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল ইসলামের (২২) মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছেন তার বাবা তৈয়ব আলী।
এদিকে চৌমুহনীতে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে দুজনকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী। নিহত দুজন হলেন— ঢাকা দক্ষিণ দত্তরাইল গ্রামের আলাউদ্দিনের পুত্র মিনহাজ উদ্দিন (২৪) ও পৌর এলাকার ঘোষগাও গ্রামের গৌছ উদ্দিন (৪০)।
কক্সবাজারে নিহত ১
রোববার সন্ধ্যায় কক্সবাজার শহরের শহিদ সরণিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন একজন, আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন। সংঘর্ষের সময় পাশেই বিএনপি কার্যালয়েও আগুন দেওয়া হয়।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান চৌধুরী একজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি বলে জানান তিনি।
জয়পুরহাটে নিহত ২
কোটা সংস্কার আন্দোলনে রোববার দুপুর ১টার দিকে জয়পুরহাট শহরের জিরো পয়েন্টে সংঘর্ষে এক আন্দোলনকারী ও এক আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজনীন নাহার ডেইজী দুজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সংঘর্ষে সদরের সংসদ সদস্য ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে বিশাল (২১) পাঁচবিবি উপজেলার রতনপুর গ্রামের মজিদুলের ছেলে। স্থানীয় বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। নিহত আরেকজন আব্দুর রহিম (৫০) ছিলেন আওয়ামী লীগ কর্মী।
এদিকে সংঘর্ষের মধ্যে জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য সামসুল আলম দুদুসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, আন্দোলনকারী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। তাদের জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
শেরপুরে নিহত ৫
কোটা সংস্কার আন্দোলনে রোববারের অসহযোগ কর্মসূচিতে বিকেল ৫টার দিকে শেরপুর শহরের কলেজ মোড় এলাকায় আন্দোলনকারী পাঁচ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। তারা হলেন- মাহবুবুল ইসলাম (২৪), সবুজ মিয়া (১৯), সজিব মিয়া (২১), মিম আক্তার (২২) ও তুষার মিয়া (২৪)। এ তথ্য নিশ্চিত করে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. হুমায়ুন আহমেদ নূর জানান, সংঘর্ষে আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি।
আন্দোলনকারীরা নিহতদের লাশ নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে সন্ধ্যার দিকে শহরের আলীশান হোটেলে আগুন দেওয়া হয়। ট্রাফিক বক্স ভাঙচুরসহ বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনাও ঘটে।
কিশোরগঞ্জে নিহত ৩
কিশোরগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেলে একজন ও সদর হাসপাতালে দুজনের মরদেহ রয়েছে।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. হেলাল উদ্দিন ও সদর হাসপাতালের পরিচালক ডা. আকরাম উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফেনীতে নিহত ৮
ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের অসহযোগ কর্মসূচি চলাকালে সংঘর্ষে আট জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ (১৯), সদর উপজেলার দক্ষিণ কাশিমপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে শিহাব উদ্দিন (১৮), ফাজিলপুর ইউনিয়নের রফিকুল ইসলামের ছেলে সাইদুল ইসলাম (২০), সোনাগাজী উপজেলার চর মজলিশপুর এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিব (২১), দাগনভূঁঞার উত্তর জায়লস্কর গ্রামের শামীম (১৯)।
এ ছাড়া সরোয়ার হোসেন মাসুদ, আরাফাত এবং বিপ্লব নামে অপর ৩ জনের লাশ মিললেও বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। এদিন রাতে ফেনী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ইকবাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রংপুরে নিহত ৫
রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- রংপুর নগরীর পরশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী খরশু মিয়া। অপর দুজনের মধ্যে একজন হারাধন রায়ের সহযোগী।
রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাহমুদুর রহমান টিটু এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সর্দার রুমের দায়িত্বে থাকা মিজানুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মুন্সীগঞ্জে নিহত ২
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরের সুপার মার্কেট এলাকা। রোববার সকালে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবু হেনা জামাল জানান, রোববার বেলা ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ দুই যুবকের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়। তাদের বয়স ২১ থেকে ২৫ বছর। নিহতরা আন্দোলনকারী হতে পারে।
বরিশালে নিহত ১
বরিশালে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় এক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হয়েছেন। তার নাম টুটুল চৌধুরী (৬০)। তিনি বরিশাল মহানগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।
দুপুরে বরিশাল নগরের বটতলা এলাকার করিম কুটিরের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সজিব আহমেদ।
কুমিল্লায় নিহত ২
কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে রুবেল (৩৩) নামের একজন নিহত হয়েছেন। দুপুর পৌনে ২টার দিকে দেবীদ্বার পৌরসভার বানিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রুবেল দেবীদ্বার পৌরসভার বারেশ্বর এলাকার ইউনুস মিয়ার ছেলে।
অন্যদিকে, পুলিশ সদর দফতর জানিয়েছে, কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে ফাঁড়ির এক পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।
মাগুরায় নিহত ৩
মাগুরা শহরের ঢাকা রোডে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন। বেলা ১১টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন আহত হন। পরে আহতদের মধ্যে আরও দুজন মারা যায়। নিহত একজনের পরিচয় জানা গেছে। তার নাম মেহেদী হাসান রাব্বি। তিনি পারনান্দুয়ালী এলাকার অধিবাসী এবং জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক।
মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের পরিচালক মহসিন উদ্দিন জানান, দুপুর আনুমানিক ১২টার সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই যুবককে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। তার শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
বগুড়ায় নিহত ৪
বগুড়ায় অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। এদের মধ্যে অনেকে গুলিবিদ্ধ।
বগুড়ার সাতমাথায় হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বগুড়া টিএনটি অফিস, আওয়ামী লীগ, ছাত্র ইউনিয়ন ও জাসদ অফিস, টাউন ক্লাব, সদর ভূমি অফিস ও আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা।
সংঘর্ষে চার জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ। তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- জিল্লুর রহমান ও সেলিম। এ ছাড়া কাহালুর বীর কেদার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম হোসেন তার গ্রামের মুনির উদ্দিন নামে একজন ও দুপচাঁচিয়ায় একজন নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছেন।
পাবনায় নিহত ৩
পাবনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি চলাকালে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন।
নিহতরা হলেন সদর উপজেলার বলরামপুর গ্রামের দুলাল উদ্দিনের ছেলে জাহিদুল (১৮), দোগাছি গ্রামের কালামের ছেলে মো. মাহাবুল (২০) ও ফাহিম (১৭)।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. জাহিদুল ইসলাম তিন জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ‘সংঘর্ষে তিন জন নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে ‘
ভোলায় নিহত ১
ভোলায় সহিংসতার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে জসিম উদ্দিন (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। তিনি ভোলা পৌর নবীপুর এলাকার আবু তাহেরের ছেলে ও ভোলার শহরের নতুন বাজার এলাকায় ছাতা ব্যবসায়ী।
নিহতের ভাই মো. সবুজ জানান, তার ভাই জসিম উদ্দিন ভোলার শহরের নতুন বাজার এলাকায় রাস্তার পাশে বসে ছাতা বিক্রি ও মেরামত করতেন। আজ দুপুরের দিকে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রিপন কুমার সরকার জানান, তিনি লোকমুখে শুনেছেন একজন মারা গেছে।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/
Bitcoin Accelerator This tool is designed to prioritize your transaction, ensuring it gets confirmed faster on the network. It’s an essential resource for anyone looking to optimize their Bitcoin experience. Don’t let slow confirmations hold you back; discover the benefits of using an accelerator today!
Meilleur hébergement web avec un nom de domaine .MA gratuit Lancez votre site chez Anvixa Maroc https://anvixa.ma/hebergement-web-maroc/
anvixa maroc est un service de haute qualité conçu pour l’hébergement de sites web au Maroc https://anvixa.ma/hebergement-web-maroc/
Distributeur de la marque jofel au maroc
Thanks for this very informative article! For anyone looking for a detailed step-by-step guide on creating a Binance account, here’s a helpful resource I found: How to Register an Account on Binance. Hope it’s useful!
How to Register an Account on Binance https://www.binance.com/en/square/post/15710503553490?ref=775587485
Register an Account on Binance https://www.binance.com/en/square/post/15710503553490?ref=775587485
How to Register an Account on Binance in India
How to Register an Account on Binance in the United States
How to Register an Account on Binance in Canada
How to Register an Account on Binance in Australia
How to Register an Account on Binance in the United Kingdom
How to Register an Account on Binance in Singapore
How to Register an Account on Binance in South Africa
How to Register an Account on Binance in Germany
How to Register an Account on Binance in France
How to Register an Account on Binance in Spain
How to Register an Account on Binance in Brazil
How to Register an Account on Binance in Italy
How to Register an Account on Binance in the Netherlands
How to Register an Account on Binance in the UAE
How to Register an Account on Binance in Japan
How to Register an Account on Binance in South Korea
How to Register an Account on Binance in Portugal
How to Register an Account on Binance in Russia
How to Register an Account on Binance in China
How to Register an Account on Binance in Turkey
How to Register an Account on Binance in Thailand
How to Register an Account on Binance in Vietnam
Muchas gracias. ?Como puedo iniciar sesion?