আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার । আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনই করা হয় না।
তাই ২১শে ফ্রেরুয়ারী ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যেতে হয় আশপাশের কোনো শহীদ মিনারে। অনেকে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করে তাতে শ্রদ্ধা জানায়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবি, নিজ প্রতিষ্ঠানে একটি শহীদ মিনারের। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা শিক্ষা অধিদপ্তর।
এমন অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্বাধীনতাকামী মানুষেরা। তারা বলছেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা জানবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকেই। ভাষা আন্দোলনের প্রতিক শহীদ মিনার দেখে তারা পাঠ্য বইয়ের সাথে মিলিয়ে সংগ্রামী ইতিহাস মনে ধারণ করবে। অথচ সে ধারণ থেকে অনেকে পিছিয়ে পড়ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার না থাকার কারণে বলে মনে করছেন স্বাধীনতাকামী মানুষেরা।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট ২৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যারমধ্যে ১২টি কলেজ, ৫৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,১৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১৯টি মাদ্রাসা রয়েছে। ২৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৬৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলেও বাকিগুলোতে নেই।
৬৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনারের মধ্যে মাত্র ৪টি কলেজে,১৮টি মাধ্যমিকে ও ৪৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। কিন্তু ১৯টি মাদ্রাসার মধ্যে ১টিতেও নেই শহীদ মিনারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া রয়েছে অর্ধশতাধিক কিন্ডার গার্টেন। এগুলোর একটিতেও নেই কোনো শহীদ মিনার, বেশিরভাগ এসব কিন্ডারগার্টেনে থাকে না একুশে ফেব্রুয়ারির কোন কর্মসুচি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে গ্রামাঞ্চলের যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে সেগুলোও রয়েছে অযত্নে অবহেলায়।
সপ্তাহব্যাপী ঘুরে দেখা যায়, ১৫৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুদ্বিজীবি স্মৃতিস্তম্ভ ছাড়া ১৫৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোনটিতেও নেই শহীদ মিনার। এছাড়াও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের রাণীশংকৈল সরকারী বালিকা, নেকমরদ সরকারী আলিমুদ্দিন, পাইলট, রাউতনগর, কাতিহার, মীরডাঙ্গী, গোগর আব্দুল জব্বার, গাজীরহাট, রাতোর, মহারাজা, ভরনিয়া, হাজী দবির উদ্দীন চৌধুরী, ধুলঝাড়ী, চোপড়া দোশিয়া সিডিও কাশিপুর বটতলা উচ্চ বিদ্যালয়সহ মোট ১৫টি বিদ্যালয়ের ছাড়া ৫২টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৭ টি বিদ্যালয়ে এবং ১২টি কলেজের মধ্যে ডিকে মহাবিদ্যালয়, রাণীশংকৈল ডিগ্রী ও নেকমরদ বঙ্গবন্ধু কলেজে ছাড়া বাকী ৯টি কলেজ নেই শহীদ মিনার এবং উপজেলা জুড়ে মোট ১৯টি মাদ্রাসার একটিতেও নেই শহীদ মিনার নেই। এছাড়াও কিন্ডারগার্ডেন গুলোতেও নেই ভাষা শহীদদের স্মৃতি সম্বন্বিত প্রতিক শহীদ মিনার।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এলে বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে শহীদদের স্মরণ করা হয়। কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না বানিয়ে শুধু আলোচনা সভা বা মিলাদ মাহফিল করে দিবসটি পালন করা হয়। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে তা-ও করা হয় না বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাঁশ, কাঠ, ককসিট দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় তারা। শহিদদের স্মরণে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি তাদের।
প্রশাসন বলছে সরকারি বরাদ্দের কথা। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার তৈরির জন্য সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ নেই। এ ছাড়া নির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি যে, শহীদ মিনার করতেই হবে, তাই নিজ উদ্যোগে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার তৈরি করতে হচ্ছে তাদের।
শহীদ মিনার না থাকা প্রসঙ্গে রাণীশংকৈল মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মহাদেব বসাক বলেন, ‘মূলত একুশে ফেব্রুয়ারির কর্মসূচিগুলো রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের সঙ্গে প্রশাসন যৌথভাবে করে দেয়। এ জন্য আমাদের কলেজে তেমন কোনো কর্মসূচি পালন হয় না।’
রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি প্রত্যাশা করি আমাদের উপজেলার প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হোক। তাহলে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের আত্মত্যাগের ইতিহাস ও তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নতুন প্রজন্মের মাঝে সৃষ্টি হবে।’
রাণীশংকৈল অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন আকাশ বলেন, শহীদ মিনার দেখে নতুন প্রজন্মের কৌতুহুল জাগবে । সেই কৌতুহুল থেকে তারা জানবে বাংলা ভাষার ইতিহাস সংগ্রামের কথা। অথচ দেশ উন্নয়ন হলেও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো শহীদ মিনার না হওয়া দুঃখজনক। অবিলম্বে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের প্রতি ছড়িয়ে দিতে এবং বাংলা ভাষার গুরত্ব বুঝাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ মিনার স্থাপন করার দাবী জানান
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. তোবারক হোসেন বলেন,স্থানীয়ভাবে অর্থ ব্যয় করে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব না। সরকারীভাবে বরাদ্দ হলে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন করা হবে।
রাণীশংকৈল উপজেলা শিক্ষা অফিসার রাহিমউদ্দিন বলেন, কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। সরকারীভাবে সহযোগিতা পেলে পর্যায়ক্রমে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন করা হবে বলে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.রকিবুল হাসান বলেন,প্রতিটি শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানদের প্রধান ও স্কুল পরিচালনা কমিটিকে আলোচনা করে উপজেলার সকল প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
https://slotbet.online/
Hey! Do you know if they make any plugins to assist with Search Engine
Optimization? I’m trying to get my website to rank for
some targeted keywords but I’m not seeing very good gains.
If you know of any please share. Cheers! You can read similar text here: Bij nl