টাঙ্গন ডেস্ক, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ গ্রামে শ্রী শ্রী রশিক রায় জিউ মন্দির এলাকায় পূজা মন্ডপ এলাকা পরির্দশন করেছেন জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা।দূর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মালম্বী হিন্দু সম্প্রদায় এবং ইস্কন সমর্থিত লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা তৈরী হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাতে সিকদারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে আয়োজিত সনাতন ধর্মালম্বীদের দূর্গা পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় তিনি মাঠে আয়োজিত পূজার সার্বিক বিষয়ে খবর নেন।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই মন্দিরের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ আছে। এবার এই পূজা শেষে আমরা তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি দুই পক্ষের রেকর্ডপত্র ও অন্যান্য বিষয়াদি যাচাই করে এই সমস্যাটির কি পার্মানেন্ট সলিশন হতে পারে সে বিষয়ে উদ্যোগ নিবো।
নাশকতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ৬ষ্ঠী থেকে এখানে বিভিন্ন মন্ডপে যাচ্ছি, আমাদের প্রশাসন সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীদের তাদের এই পূজা নিরাপদ পরিবেশে উদযাপন করতে পারে আমাদের সর্বাত্নক প্রচেষ্টা শুরু থেকেই নিয়েছি। এখনো পর্যন্ত কোথাও কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরী হয়নি। এখানে পুলিশ বিভাগ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বর্ডার এলাকাগুলোতে বিজিবি, আনসার সবাই তৎপর আছে যাতে সনাতন ধর্মালম্বীরা নিরাপদ পরিবেশে পূঁজা উদযাপন করতে পারে।
তিনি আরও বলেন আবহমানকাল থেকে হিন্দু, মুসলিম তারা পাশা-পাশি ধর্মীয় উৎসব পালন করে আসছে। মুসলমানরা হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব পালনে সহযোগিতা করে আসছে। ঠিক তেমনি হিন্দুরা মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পালনে সহযোগিতা করে আসছে।
এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিনের পুরাতন রসিক রায় জিউ মন্দিরের নামে ২টি মৌজায় মোট ৫২ একর দেবত্তোর জমি রয়েছে। এই জমির মালিকানা নিয়ে মন্দিরের সেবাইত ফুলেন চন্দ্র সরকারের সাথে এলাকার কিছু লোকজনের বিরোধ চলছিল।
১৯৯৩ সালে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সেই বিরোধের নিস্পত্তি হয়। কিন্তু ২০০৯ সালে ইস্কনের লোকজন ওই জমির মালিকানা দাবি করে আকস্মিক ভাবে মন্দিরে অবস্থান নেয়। এই নিয়ে ২০০৯ সালে সেখানে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে ও ইস্কনের লোকজনের সংষর্ষ হয়। এতে ফুলবাবু নামে একব্যক্তি মারা যায়। এ ঘটনায় ইস্কনের লোকজনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এই নিয়ে সেখানে দুই পক্ষের বিরোধ চলতে থাকে এবং প্রতি বছর দূর্গা পূজার সময় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এ বিরোধ নিরসনে আপোষ মিমাংশার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় প্রশাসন।
পরবর্তীতে ২০১৪ সালে ওই মন্দিরে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ দূর্গা পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি নিলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এই উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি সাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। এবারও সেই ধারা অব্যাহত আছে। এ নিয়ে ১১ বার ১৪৪ ধারা জারি হলো।
একটি সূত্র বলছে, বিষয়টি এতোদিনে মিমাংসা হয়ে যেতো কিন্তু সাবেক সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনের স্ত্রী ইস্কনের একজন সদস্য এবং তিনি কেন্দ্রীয় ইস্কনেরও একজন সদস্য। রমেশ চন্দ্র সেন ক্ষমতায় থাকায় তিনি ইস্কনের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন, ফলে বিষয়টি দীর্ঘস্থায়ী হয়। সূত্রটি আরও জানায় নির্বাচনের সময় রমেশ চন্দ্র সেন এখান থেকে অনেক টাকাও নিতেন। শুধু রমেশ চন্দ্র সেনই নয়, ঠাকুরগাঁওয়ের হিন্দু নেতাসহ অনেকেই বিভিন্ন ভাবে এখান থেকে সুবিধা ভোগ করতেন।
এবারে শান্তিপূর্নভাবে ঠাকুরগাঁওয়ের ৫টি উপজেলায় ৪’শ ৭৩টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/
[…] […]