বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি: জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ঝড়ের কবলে পড়ে দুই নারীসহ জমে থাকা পানিতে ডুবে আড়াই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১ জুন) ভোরে ফজরের নামাজের সময় উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়ন ও দুওসুও ইউনিয়নে এঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের শালডাঙ্গা গ্রামের পইনুল ইসলামের স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪০), একই গ্রামের দবিরুল ইসলামের স্ত্রী জাহেদা বেগম (৫০) এবং একই উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের লালাপুর নয়াপাড়া গ্রামের নাজমুল ইসলামের আড়াই বছরের ছেলে নাঈয়ুম।
স্থানীয়রা জানায়, ভোরে ফজরের নামাজের সময় দুটি ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। কাঁচা বাড়িঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে। গাছ ভেঙে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে শতাধিক পরিবার। এদিকে ঘটনার পর থেকে এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মরিচ, বোরো ধান, পটলসহ বিভিন্ন ফসল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঝড়ে পাড়িয়া ইউনিয়নের তিলকড়া, শালডাঙ্গা, বঙ্গভিটা, লোহাড়া, বামুনিয়াসহ ১২টি গ্রাম, বড়বাড়ি ইউনিয়নের বেলহাড়া, বেলবাড়ি, বটের হাট, হরিপুরসহ আটটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বেশির ভাগ কাঁচা বাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে। গাছ ভেঙে পড়েছে ঘরের ওপর।
পইনুল ইসলাম বলেন ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যাই। নামাজ শেষে ফিরে এসে দেখি বাতাসে বারান্দায় টিন ও ছাউনি নিচে চাপা পড়ে আছে আমার স্ত্রী। উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পাড়িয়া ইউনিয়নের প্রাম পুলিশের দফাদার আজিজুর রহমান জানান, ঝড়ের সময় বারান্দায় বসে ছিলেন জাহেদা। মেঘের গর্জন আর ঝড়ে গাছপালা উড়তে দেখে বারান্দাতেই মারা যান তিনি।
দবিরুল ইসলাম জানান, তাঁর স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। ঝড়ের সময় ভয়ে স্ট্রোক করেছেন বলে ধারণা করছেন তার।
লালাপুর নয়াপাড়া গ্রামের নাজমুল ইসলাম জানান, বাড়ির পাশে গর্তে বৃষ্টির পানি জমেছিল। খেলতে গিয়ে শিশুটি পড়ে গিয়েছিল। পরে পরিবারের লোকজনের নজরে আসলে তাকে উদ্ধার করে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বালিয়াডাঙ্গী জোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম জানান, ঝড়ে ৪০ টির বেশি বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে এবং ভেঙে গেছে। এছাড়াও অনেক স্থানে বৈদ্যুতিক তারের ওপর গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। বালিয়াডাঙ্গী বাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি সব এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ। সকাল থেকে আমাদের লোকজন মাঠে কাজ করছে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফছানা কাওছার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান এবং আমাদের লোকজন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলো ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে কাজ করছে।
ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন বলেন ঝড়ে ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনাটি দু:খজনক। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/