টাঙ্গন ডেস্ক রিপোর্ট : আর মাত্র চারদিন পরেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কে হবেন ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য তা নিয়েই চলছে জল্পনা আর কল্পনা। হাট-বাজার, চায়ের আড্ডায়, পাড়া-মহল্লায় একটাই আলোচনা কে হবেন এই ‘আইন প্রনেতা’।
ঠাকুরগাঁও-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী ৭ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব দবিরুল ইসলামের ছেলে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন। তার বিপরীতে শক্ত অবস্থানে আছেন সতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন আপন চাচাতো ভাই উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আসলাম জুয়েল। তিনি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন। ওই পদ থেকে পদত্যাগ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার জন্য মাঠে নেমেছেন তিনি। তার নির্বাচনি প্রতীক ট্রাক নিয়ে।
তবে এ আসনে আরও প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত নাঙ্গল মার্কার প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি নূরুন নাহার বেগম। তিনি সূজন ও জুয়েলের আপন ফুপাতো বোন। ঠাকুরগাঁও-২ আসনে দুই ভাই এক বোনের লড়াইয়ে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা। পৌসের কনকনে ঠান্ডায় ভোটারদের দাড়ে দাড়ে ছুটে চলেছেন প্রার্থীরা। আর দিয়ে যাচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।
এছাড়াও এই আসনে ডাব প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী রিম্পা আক্তার ও সোফা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো: আব্দুল কাদের।
নৌকার সাথে বিএনপির মতো শক্তিশালী প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী না থাকলেও শক্ত অবস্থানে আছেন আলী আসলাম জুয়েল। তবে ভোটের হিসাব বলছে এ আসনে দলমত নির্বিশেষে ভোটাররা যদি ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন তাহলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন আলী আসলাম জুয়েল। অপরদিকে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ভোটাররা যদি ভোটকেন্দ্র ভোট দিতে না আসেন তাহলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সূজন। ভোটের এই জটিল সমীকরণে কে নির্বাচিত হবেন ‘আইন প্রনেতা’ তা নিয়ে চলছে জল্পনা আর কল্পনা। চায়ের আড্ডায় বাজারে কিংবা পথে ঘাটে এ যেন এক আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছে।
জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন চলছেন দলের নেতাকর্মীদের বড় অংশকে নিয়ে। আর আলী আসলাম জুয়েল দলমত নির্বিশেষে সার্বজনীন ভাবমূর্তি নিয়ে এগোচ্ছেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে বালিয়াডাঙ্গী এবং হরিপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের অনেক পদধারী নেতা নৌকা মার্কার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারনায় অংশ না নিয়ে অংশ নিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী আসলাম জুয়েলের নির্বাচনী প্রচারনায়।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা, হরিপুর উপজেলা এবং রাণীশংকৈলের আংশিক উপজেলা নিয়ে ঠাকুরগাঁও-২ সংসদীয় আসন। মোট ভোটার ৩ লাখ ৬৮ হাজার ২৫ জন।
ঠাকুরগাঁও-২ আসনে মোট প্রার্থী ৫ জন। এর মধ্যে প্রচার-প্রচারণায় সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছেন তিন প্রার্থী নৌকার অধ্যক্ষ মাজাহারুল ইসলাম সূজন, ট্রাক প্রতিক নিয়ে আলী আসলাম জুয়েল ও নাঙ্গল মার্কা নিয়ে নূরুন নাহার বেগম। তিনজনই সংসদ সদস্য আলহাজ্ব দবিরুল ইসলামের ছেলে, ভাইস্তা ও ভাগ্নি বলে জানা গেছে ।
এর মধ্যে আবার আলী আসলাম জুয়েল এবং নূরুন নাহার বেগমের মধ্যে আরও এক ধরনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আলী আসলাম জুয়েল নূরুন নাহার বেগমের ছোট বোনকে বিয়ে করেছেন সে দিক থেকে ভগ্নিপতিও বটে।
নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুই ভাই ভোটের মাঠে থাকায় তাদের ভেতরের অনেক কথায় এখন জনসন্মুখে শোনা যাচ্ছে। কে ভ‚মি দস্যূতা করেছেন, কার কতগুলো বাড়ি, একে অপরকে ঘায়েল করার জন্য নানা কথা তুলে ধরছেন তারা। থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসার মতো ঘটনা ঘটেছে বলে অনেকেই জানান।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী আসলাম জুয়েল বলেন যদি স্ষ্ঠুু নির্বাচন হয় তাহলে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো। আমার যে বিপক্ষ নৌকা মার্কার প্রার্থী রয়েছে তাদের লোকজন আমার লোকজনের উপর হামলা চালিয়েছে, গাড়ি ভাংচুর করেছে, বিভিন্ন জায়গায় ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, প্রশাসন যদি তৎপর থাকে এবং সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন উপহার দেয় সেই প্রত্যাশাই করছি।
আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকা মার্কার প্রার্থী অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন বলেন ৮ম বারের মতো বিপুল ভোটে এই আসনটি উপহার দেব। স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে বলেন এ ধরনের বিষয় আমার জানা নেই। এগুলো মিথ্যাচার, স্বতন্ত্রী প্রার্থী ষড়যন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লিপ্ত হয়েছেন। তিনি এখন ষড়যন্ত্রে ব্যাস্ত। নির্বাচনে ভোটারদের কাছে যাওয়া, সেটা বাদ দিয়ে ষড়যন্ত্রে ব্যাস্ত হয়ে গেছেন।
ঠাকুরগাঁও জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. মাহাবুবুর রহমান এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
https://slotbet.online/