মো: রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও : তড়িঘড়ি করে রাতের আঁধারে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় রাস্তা কার্পেটিং করার অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। দায়সারা ভাবে কাজ করার পরদিনই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। এ নিয়ে অভিযোগ করার পরও প্রতিকার পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। ফলে দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন যানবাহন ও পথচারীরা। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি তাদের সাথে দূরব্যবহার করেন বলে জানান এলাকাবাসী।
জানা গেছে, জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার চণ্ডিপুর-বাঘমারা পাকা সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় সেই রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রায় ২০ লাখ টাকায় ১ হাজার মিটার অংশ ১৫ মিলিমিটার সিলকোড কার্পেটিং করার কাজ পায় আব্দুস সামাদ নামে এক ঠিকাদার।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারের লোকজন রাতের আধারে এলজিইডিকে ম্যানেজ করে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে রাস্তার কাজ করেছে। যা হাত দিয়ে টান দিলে বা পাঁ দিয়ে ঘষা দিলেই কার্পেটিং উঠে আসছে।
রায়হান নামে এক যুবক বলেন, এই রাস্তার কাজে শুরু থেকেই ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়ে আসছে। রাস্তার কার্পেটিংয়ে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে হাত দিলেই কার্পেটিং উঠে আসছে। আর এ সকল অসৎ ঠিকাদার এবং অসৎ কর্মকর্তাদের কারণে সরকারের কোটি কেটি গোচ্ছা যাচ্ছে।
পথচারী লিমন হোসেন বলেন, কোনো গাড়ি এসে ব্রেক করলে রাস্তার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। আমরা চাই, ভালোভাবে আমাদের রাস্তার কাজ করা হোক। যাতে রাস্তাটি দীর্ঘস্থায়ী হয়। ঠিকাদার দায়সারা ভাবে রাস্তার কাজ করে শান্তির বদলে দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে আমাদের।
ক্ষোভ প্রকাশ করে এক বৃদ্ধ বলেন, সরকার এতো টাকা খরচ করে রাস্তা করেছে, সেখানে এলজিইডি ও ঠিকাদারের দুনীর্তির কারণে সব টাকা জলে গেল। হাত দিয়ে রাস্তার কার্পেট তুলা যাচ্ছে, সেখানে ভারি যানবাহন কিভাবে যাবে। সরকার রাস্তা করতে কি কম টাকা দেয়? এলজিইডি-ঠিকাদারের জন্য সরকারের বদনাম। নিম্নমানের পাথর, ইট, বালু, খোয়া ব্যবহার করে রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী করে ঠিকাদার চলে গেছে। আমরা এই অনিয়মের বিচার চাই।
বাঘমারা গ্রামের কয়েকজন জানান, রাতের আধারে ঠিকাদারের লোকজন রাস্তার কাজ করে। এলাকাবাসীরা রাতের বেলা কাজ করতে বাঁধা দিলেও তারা শোনেননি। পরের দিন দেখা যায় জুতার সঙ্গে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। গত কয়েকদিনে রাস্তার বেশির ভাগ কার্পেটিং উঠে গেছে। উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে ঠিকাদার আব্দুস সামাদ বলেন, কোন সমস্যা হলে এলজিইডির সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী কাজ করা হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে পীরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মাইদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরির্দশন করে দেখার পর বলা যাবে কি হয়েছে। পরবর্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন বিশ্বাস ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই গেয়ে জানান, আমরা চেস্টা করি ভালভাবে কাজ বাস্তবায়ন করে নেয়ার। এলাকার মানুষ অভিযোগ করে ছিল। তখন কাজ ভালই হচ্ছিল। এখন কেনো উঠে যাচ্ছে খতিয়ে দেখা হবে।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/