ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ে শুরু হতে চলেছে শীতের আগমন। শীত মানেই প্রশান্তির ঘুমের জন্য সবচেয়ে উপযোগী ঋতু। দিনে প্রচন্ড গরম আর ভোর রাতে শীত, বইতে শুরু করে হিমেল হাওয়া। রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে উঠে ঠান্ডা। সেভাবে শীতের শুরু না হলেও জলবায়ু পরিবর্তনে অনুভূত হচ্ছে শীতের আমেজ। আর এই শীত মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের হিড়িক পড়েছে লেপ-তোষক বানাতে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে লেপ-তোষক বানানোর দৃশ্য চোখে পরে। এর মধ্যে শহরের গোধুলী বাজার, কালিবাড়ী, টেকনিকাল কলেজ মোড়, বাসষ্ট্যান্ড, নরেশ চৌহান সড়ক, ঠাকুরগাঁও রোডসহ বিভিন্ন স্থানে লেপ-তোষক বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। দোকানের সামনে বসে একের পর এক লেপ-তোষক বানাচ্ছেন কারিগরেরা।
সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের সেন্টারহাটের মো: মকবুল হোসেন জানান, বেশ কয়েকটি লেপ ও তোষকের অর্ডার পেয়েছেন তিনি। প্রতিদিন ৩/৪ টি করে লেপ ডেলিভারী দিচ্ছেন। এতে আয়ও করছেন বেশ বলে জানান তিনি।
পৌর শহরের আগমনী ক্লাবের সামনের লেপ-তোষকের দোকানদার আব্দুল জলিল জানান, প্রতিদিন তারা লেপ সেলাই করে থাকেন। সাইজ অনুযায়ী প্রতিটি লেপে তারা মুজরি পান দেড়শ থেকে আড়াইশ টাকা। আর সেলাইকর্মীরা সবাই একই নিয়মে মুজরি নিয়ে থাকেন। দিন শেষে ৬’শ থেকে ১ হাজার টাকা রোজগার হয় তাদের। তা দিয়েই সংসার চালান তারা।
লেপ বানাতে আসা পৌর শহরের হাজীপাড়া মহল্লার গৃহিনী শাহানাজ বেগম বলেন, দিনে সামান্য গরম থাকলেও রাতে ঘুমানোর সময় অনেক ঠান্ডা করছে। বিশেষ করে রাতের শেষ সময়ে প্রচুর ঠান্ডা। তাই আগেভাগেই শীতের জন্য লেপ বানাতে আসছি। কারন শীত যতই বাড়বে এসব দোকানে ভীড় ততই বাড়বে।
এলাকার লেপ-তোষক ব্যবসায়িরা জানান, কিছুটা শীত অনুভ’ত হলেও এখনো ভালো করে শীত পরেনি। এর পরেও রাতে শীত করে। তাই লোকজন শীতবস্ত্রের প্রতি ঝুঁকছেন। প্রতিদিন প্রায় ১০-১২টি লেপ-তোষকের অর্ডার আসছে। শীত যতই বাড়বে অর্ডার ততই বাড়তে থাকবে বলে জানান তারা।
শহরের কালিবাড়ী বাজারের মিন্টু তুলা ঘরের এক কর্মচারীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, তুলা ও কাপড়ের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর লেপ-তোষক বানাতে খরচ কিছুটা বেশি পরছে। শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৬৮০ থেকে ৯৫০ টাকা বা এর চেয়ে বেশি, কার্পাস তুলা ১৮০ থেকে ২শ টাকা, গার্মেন্টস তৈরি কালো হুলু কালা পচা তুলা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, সাদা তুলা ৯০ থেকে দেড়শো টাকায় কিনতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এছাড়াও কাপড়ের গজ মান অনুযায়ী প্রতি গজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সব মিলিয়ে ভালো মানের একটি লেপ বানাতে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৮শ টাকার মতো খরচ পরছে। একই মানের একটি তোষকেও খরচ আসে প্রায় আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। এছাড়াও কারও ব্যক্তিগত আরও ভাল মানের লেপ-তোষকে খরচ তাদের চাহিদামত। সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন করিগররা।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/