• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সংসারের হাল ধরতে চেয়ে নিজেই এখন বোঝা ; গুনতে হচ্ছে মৃত্যুর প্রহর! আজারবাইজানে কপ-২৯ সম্মেলনে ইএসডিওর সাইড ইভেন্ট অনুষ্ঠিত খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত ২৬ নভেম্বর থেকে সাত দিনব্যাপী খুলনায় বিভাগীয় বইমেলা দেশকে এমনভাবে গড়তে চাই, জনগণই হবে সকল ক্ষমতার মালিক-প্রধান উপদেষ্টা সাফ ফুটবল জয়ী তিন কন্যাকে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের সংবর্ধনা যানজট নিরসনে হিলি পৌর প্রশাসকের মতবিনিময় ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল উন্নীতকরণের দাবিতে রাণীশংকৈল মানববন্ধন হিলিতে নিত্যপন্যের বাজার নিয়ন্ত্রন ও যানজট নিরসনে অভিযান বালিয়াডাঙ্গীতে করাতকল মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা

উপজেলা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বারণ মানছেন না কেউ, খেলছেন মন্ত্রী এমপিরাই

Reporter Name / ১৬৬ Time View
Update : শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট হচ্ছে না। চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন আবুল কাশেম চিশতি। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক হোসনেআরা বেগমও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে। কারণ ওই পদে একাধিক প্রার্থী রয়েছেন।

পাশের উপজেলা রাউজানে কোন ভোট ছাড়াই উপজেলা পরিষদ গঠন হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য রেলপথ মন্ত্রনালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এরপর থেকে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট হচ্ছে না। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও মনোনয়ন দাখিলকারী চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের তিন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।

চেয়ারম্যান পদে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এহেছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল, ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা নুর মোহাম্মদ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুবিনা ইয়াসমিন একক প্রার্থী হিসেবে বিনা ভোটে বিজয়ী হচ্ছেন। বলা হচ্ছে বিরোধী দলের বর্জনের মধ্যেও ভোট ছাড়াই নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে স্থানীয় সংসদ সদস্যরাই মূখ্য ভূমিকা পালন করেছেন।

চট্টগ্রামের অন্য উপজেলায় একক প্রার্থী দিতে না পারলেও পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষেই কাজ করছেন সরকারি দলের মন্ত্রী, এমপিরা। নিজের প্রার্থীদের পাশ করিয়ে আনতে রীতিমত মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন কেউ কেউ। তাতে তৃণমূলে দলের মধ্যে কলহ বিরোধ বেড়েই চলেছে। কোন্দলসংঘাত বাড়ার আশঙ্কা প্রকট হচ্ছে।

দলীয় প্রতীক বাদ দিয়ে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে প্রার্থী হতে দলের নেতাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় আওয়ামী লীগ। কেন্দ্র থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার না করতে মন্ত্রী, এমপিদের নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্বাচনে তাদের স্বজনদের প্রার্থী হতেও বারণ করা হয়। তবে কেন্দ্রীয় এসব নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।

মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি, সমমনা দল ও জোট এবং জামায়াতের বর্জনের মুখে এই নির্বাচন একতরফা। নির্বাচনের মাঠ একেবারেই ফাঁকা। আর এই খালি মাঠে খেলছেন সরকারি দলের মন্ত্রী, এমপিরাই। তারা পছন্দ মতো প্রার্থী দিয়ে তাদের জিতিয়ে আনতে নানা কলাকৌশল অবলম্বন করছেন। বেশিরভাগ উপজেলায় দলের একাধিক নেতা প্রার্থী হয়েছেন। এমপিরা নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে নামায় দলীয় অন্য প্রার্থীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। প্রশাসন আর নির্বাচন কমিশন হাওয়া বুঝে কাজ করছে।

অভিযোগ আছে, এমপির হাত যে প্রার্থীর মাথায় তিনি প্রশাসনের নেক নজরে আছেন। তাদের সমর্থকদের ভাবখানা এমন-বিজয় নিশ্চিত, শুধু ঘোষণা বাকি। আর যারা এমপির সমর্থন বঞ্চিত তারা আছেন উদ্বেগ শঙ্কায়। তাদের সমর্থকদের বক্তব্য হলো- ভোটারদের সমর্থন আমাদের দিকে, কেড়ে না নিলে আমরাই বিজয়ী হবো।

গেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো আমি আর ডামির এই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে নির্বাচনী আমেজের ছিটেফোঁটাও নেই। তবে সরকার দলীয় নেতায় নেতায় ভোটের লড়াই আর তাতে উত্তাপ উত্তেজনার চেয়ে মন্ত্রী, এমপিদের মরিয়া ভূমিকা আমজনতার বিনোদনের খোরাক মিলছে। গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহের যন্ত্রণা ছাপিয়ে গ্রামের হাট বাজার, চায়ের দোকান, মানুষের আড্ডা-জটলায় উপজেলার ভোটে সরকারি দলের গৃহবিবাদ আলোচনায় উঠে আসছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হলেও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্চা নেই। এরফলে মূল দায়িত্ব আইন প্রণয়ন এবং সংসদে ভূমিকা পালনের বদলে নির্বাচনী এলাকার সবকিছুই নিজের প্রভাব বলয়ে রাখতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সংসদ সদস্যরা। যার কারণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারছে না। সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, জবাবদিহিতার বদলে ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী শাসন পরিস্থিতিকে আরো নাজুক করে তুলেছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আক্তার কবির চৌধুরী বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতি, অপশাসন আর নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন নেই।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার যে অধঃপতন হয়েছে তার উদাহরণ চলমান উপজেলা নির্বাচন। যুগ যুগ ধরে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে হয়ে আসছে। আওয়ামী লীগ আইন সংশোধন করে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করেছে। এখন বেশির ভাগ দলের বর্জনের কারণে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে দলীয় প্রতীক বাদ দিয়েছে। সরকারি দল আওয়ামী লীগ যেখানে দলীয় প্রার্থীদের জন্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছে সেখানে রাউজানে কীভাবে একক প্রার্থী দেওয়া হয়। সেখানে এক ব্যক্তির শাসন চলছে। দলীয় সিদ্ধান্ত সেখানে অকার্যকর। এখন রাঙ্গুনিয়াতেও একই অবস্থা চলছে।

নির্বাচন বলে এখন আর কিছু নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত সংসদ নির্বাচনে নজিরবিহীনভাবে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী করেছে। কোথাও আমি আর ডামি, কোথাও আসন ভাগাভাগির নির্বাচন হয়েছে। এবার উপজেলায় আওয়ামী লীগের এ-টিম আর বি-টিমের মধ্যে খেলা হচ্ছে। এটা প্রীতিম্যাচে রূপ নিয়েছে। এমপিদের পছন্দের লোকজন দিয়ে উপজেলা পরিষদ হবে। জনমতের সঠিক প্রতিফলন ছাড়া স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান কখনো কার্যকর হবে না। গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার এখন কাগজে কলমে, বাস্তবে এর কিছুই নেই।

চট্টগ্রামে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ আগামী ৮মে। ওইদিন সন্দ্বীপ, মীরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২১ মে। ওইদিন রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও রাউজানে ভোট। তৃতীয় ধাপে আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে আনোয়ারা, বোয়ালখালী, পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। চতুর্থ ধাপে বাঁশখালী উপজেলা ও লোহাগাড়া উপজেলায় আগামী ৫ জুন ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ১৫টি উপজেলার মধ্যে বাকি দুটি উপজেলার ভোটের তফশিল এখনো ঘোষণা করা হয়নি।

এদিকে রাউজানে গতবারের উপজেলা পরিষদ, পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে একক প্রার্থিতার মধ্যে বিনা ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিগত ১৫ বছর সেখানে ভোট হচ্ছে না। ভোট ভুলতে বসেছে রাউজানের ভোটারেরা। এবার রাঙ্গুনিয়ায় ভোট শুধু ভাইস চেয়ারম্যান পদে। রাউজানের মতো সেখানেও ভোটের প্রয়োজন ফুরিয়ে আসছে। জানা গেছে, রোষানলে পড়ার ভয়ে ইচ্ছে থাকলেও অনেকে প্রার্থী হওয়ার সাহস করেননি। যদিও দলের নেতারা বলছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনেই একক প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। অন্য উপজেলায় দলের একাধিক নেতা প্রার্থী হয়েছেন।

হাটহাজারীতে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন। চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম রাশেদুল আলম (উত্তর জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান, উত্তর জেলার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইউনুচ গণি চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ নূর খান ও যুগ্ম সম্পাদক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য জসিম উদ্দীন শাহ।

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগ নেতার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারাই। চেয়ারম্যান পদে ২জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২জন এবং পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন মনোনয়ন ফরম দাখিল পরবর্তী প্রার্থিতার বৈধতা পেয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন নাজিমুদ্দিন মুহুরী এবং বখতিয়ার সাঈদ ইরান। নাজিমুদ্দিন মুহুরী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বখতিয়ার সাঈদ ইরান চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সন্দ্বীপে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনউদ্দীন মিশন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফোরকান উদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট নাজিম জামশেদ।

এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ছাড়া আর কেউ মনোনয়ন জমা না দেওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পথে তিনি। মহিলা ভাইস চেয়ামর‌্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হালিমা বেগম শান্তা ও নাহিদ তন্নী লিজা। সীতাকুণ্ডে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুল আলম চৌধুরী রাজু ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ মঞ্জু প্রার্থী হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে কাজী গোলাম মহিউদ্দিন ও মো. জালাল আহমেদ।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে শাহিনুর আক্তার বিউটি, শামীমা আক্তার লাভলী ও হামিদ আক্তার আছেন। মীরসরাই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এনায়েত হোসেন নয়ন, উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস হোসেন আরিফ, সাবেক হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি উত্তম কুমার শর্মা ও মোহাম্মদ মোস্তফা ওরফে লন্ডনী মোস্তফা প্রার্থী হয়েছেন।

আরএম/ টাঙ্গন টাইমস


আপনার মতামত লিখুন :

One response to “উপজেলা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বারণ মানছেন না কেউ, খেলছেন মন্ত্রী এমপিরাই”

  1. You actually make it appear really easy with your presentation but I in finding
    this topic to be really one thing which I feel I would
    by no means understand. It kind of feels too complicated and very broad for me.
    I am looking ahead to your next put up, I’ll attempt to get
    the grasp of it! Lista escape roomów

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
HTML Snippets Powered By : XYZScripts.com
https://slotbet.online/
HTML Snippets Powered By : XYZScripts.com