ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক শহিদুল ইসলাম। ১৯ বছর ৮মাসের কর্মজীবন চলছে তার। ২০০৪ সালে এমএলএসএস (পিয়ন) পদে দুই হাজার ৫’শ টাকা বেতনে চাকুরি শুরু। ২০২৪ সালে তার বেতন ৩০ হাজার ৭৩৪ টাকা।
তিনি ২০০৪ সালে ঝলঝলি পুকুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি পাশ করেন। ২০১১ সালের ২৯ জুন পদোন্নতি পেয়ে অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে ৭ হাজার টাকা বেতনে চাকুরী করেন। ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সালে জুন পর্যন্ত তার মাসিক বেতন ভাতাদি ৩০ হাজার ৭৩৪ টাকা।
শহিদুল ইসলাম চাকুরি জীবনে ২০০৪ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত আয় করেছেন প্রায় ২০ লাখ টাকা। কিন্তু সম্পদের মালিক হয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। এছাড়াও গাড়ি-বাড়িসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। ঠাকুরগাঁও শহরের প্রাণ কেন্দ্র বড় মাঠের পাশে গড়ে তুলেছেন ৬ তলা ফাউন্ডেশনের আলিশান বাড়ি। শহরের নিশ্চিন্তপুর, গোয়াপাড়া, শিংপাড়াসহ একাধিক স্থানে তার মালিকানাধীন জমি রয়েছে। শহিদুল ইসলাম শুরু দিকে ঠাকুরগাঁও শহরে এসে কম্পিউটারের দোকানে টাইপিংয়ের কাজ করতো। এই কাজের সুবাদে সরকারি কর্তাবাবুদের সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। তৎকালীন জেলা প্রশাসক গাজী মিজানুর রহমানের সময়ে তার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এমএলএসএস (পিয়ন) পদে চাকুরী হয়।
২০১৮ সালে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার পীরগঞ্জ-বীরগঞ্জ সড়কের পাশে গুয়াগাঁও গ্রামে ১৩২/৩৩ কেভি এয়ার ইনসালটেড সুইচগার সাব-ষ্টেশন নির্মাণের জন্য সরকার ৫ একরের অধিক জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। শহিদুল ইসলাম বিষয়টি জানতে পেরে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ওই গ্রামের সহজ সরল কৃষকদের ঠকিয়ে ও ভ‚ল বুঝিয়ে নাম মাত্র মূল্যে সেই জমি লিখে নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে দুদকে অভিযোগ দায়ের করেন এক ভূক্তভোগী।
পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে দুদক অনুসন্ধানে নামে। দুদক জানতে পারে শহিদুল ইসলাম প্রায় দেড় কোটি টাকা গোপন করে দুদকের কাছে সম্পদের বিবরণী দাখিল করেছেন। দুদক আয় বর্হিরভ‚ত সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলের অপরাধে দূর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঠাকুরগাঁওয়ের সহকারি পরিচালক আজমির শরিফ মারজী বাদি হয়ে ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর একটি মামলা দায়ের করেন। যা আদালতে চলমান রয়েছে।
২০২৪ সালের ৬ মার্চ টিসিবি’র ডিলাররা শহিদুলের বিরুদ্ধে প্যাকেট জাতকরণের জন্য লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। শহিদুল এর উত্তর দিলে সন্তোষজনক না হওয়ায় বিষয়টি এখনো তদন্তনাধীন রয়েছে।
শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন যেহেতু মামলা চলমান রয়েছে সে জন্য কোন কথা বলতে রাজি হননি।
শহিদুলকে ট্রান্সফারের কথা জানিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন টিসিবি’র বিষয়ে কারণ দর্শাণো হয়েছে। সে জবাব দিয়েছে, জবাবে সন্তুষ্ট না হওয়ায় তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক তালেবুর রহমান, বলেন অবৈধ সম্পদ নিয়ে দুদকে মামলা চলমান রয়েছে, এটা আমাদের চলমান প্রক্রিয়া, এ বিষয়ে খবর রাখার কথা জানালেন এই কর্মকর্তা।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/